স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর
ডটকম: আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় কামরুল ইসলাম ও
আ ক ম মোজাম্মেল হক ‘নৈতিকভাবে মন্ত্রী পদে থাকার অধিকার হারিয়েছেন’ বলে
আইনজীবীদের একটি অংশ দাবি করলেও দুই মন্ত্রীর সহকর্মীরা এ বিষয়ে সরাসরি
কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, “এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত বিবেচনার ব্যাপার।”
একই কথা বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
“এখানে আইনগত ব্যাপার আছে, আরেকটা আছে নৈতিকতা। নৈতিকতার ব্যাপারটা যার যার নিজের ব্যাপার। সেটা আমাদের কিছু বলার নাই।”
মার্চের
শুরুতে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের আপিল মামলার রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে
প্রধান বিচারপতিকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ও
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল।
ওই বক্তব্যের কারণে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে রোববার তাদের সাজা দেয় আপিল বিভাগ।
দুইজনকে
৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায়
ঘোষণা করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, আদালত অবমাননার বিষয়ে দেশের
জনগণকে একটি বার্তা পৌঁছে দিতেই দুই মন্ত্রীকে এ দণ্ড।
এই সাজার পর
কামরুল ও মোজাম্মেল মন্ত্রী পদে থাকতে পারেন কি ন্ সেই প্রশ্ন উঠলে
আইনজীবীদের এক পক্ষে বলা হয়, এই রায়ের কারণে মন্ত্রিত্ব না থাকার কোনো
বিধান সংবিধানে নেই। অন্য পক্ষের দাবি, ‘শপথ ভঙ্গের’ কারণে তারা মন্ত্রী
থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই সোমবার মন্ত্রিসভার
বৈঠকে অংশ নেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক
ম মোজাম্মেল হক।
বৈঠক শেষে বেরিয়েই এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে হয় আইনমন্ত্রী ও সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রীকে।
কামরুল
ও মোজাম্মেল আর মন্ত্রী পদে থাকতে পারেন কি না- এ প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন,
“এখানে এটা একদমই পরিষ্কার, এখানে কিন্তু সংবিধান ক্ষুণ্ন হওয়ার কোনো
ব্যাপার নাই। এখানে পদত্যাগ করার কোনো বাধ্যবাধকতা নাই। এটা সম্পূর্ণ তাদের
ব্যক্তিগত বিবেচনার ব্যাপার।”
আদালত নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যে মন্ত্রীদের শপথ ভঙ্গ হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “না, শপথভঙ্গ হয়নি।”
সাংবাদিকদের
প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে একটা শব্দও আলোচনা
হয়নি। সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে এটা কি হুট করে বলা যায়?
বৈঠকে দুই
মন্ত্রীকে কেমন দেখেছেন- এ প্রশ্নে কাদের বলেন, “উনারা আগেই মতোই ছিলেন,
অ্যাজ ইউজুয়াল। আমি উনাদের মধ্যে ব্যতিক্রম দেখিনি।”
নৈতিকভাবে তারা এখন আর মন্ত্রী থাকতে পারেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরও কাদের এড়িয়ে যান।
“আমরা
তো একেক সময় একেক কথা বলব না। এর আগেও বিষয়টা ভালভাবে নিইনি। আমাদের
সরকারি উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি ভালভাবে নেয়নি এটা হলো সত্য কথা। কারণ দেশের
প্রধান বিচারপতি প্রতিষ্ঠান। তার ব্যাপারে কোনো সুইপিং রিমার্কস করা সঙ্গত
নয়, সমীচীন নয়।”
কাদের দাবি করেন, আদালতের রায় নিয়ে সরকারিভাবে বা
দলীয় ফোরামে কোনো আলোচনা হয়নি। আর আলোচনা হওয়ার আগে তিনি নিজেও ‘আরেকটি
সুইপিং রিমার্কস’ করতে চান না।
আদালত নিয়ে মন্তব্যে দুই মন্ত্রীর শপথভঙ্গ হয়েছে বলে মনে করেন কি না জানতে চাইলে কাদের আইনমন্ত্রীকে দেখিয়ে দেন।
“শপথ থাকে কি থাকে না- আইনমন্ত্রী ভালো বলতে পারবেন। আমি আইন পড়িনি, কাজেই আইন সম্পর্কে জানি না।”
দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত কি না- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, “আমার একজন কলিগের পদত্যাগ আমি দাবি করব- এটা তো ঠিক না।”
প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী জানান।
0 coment rios: