শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০১৬

বিবিসির ‘মুসলিম সাংবাদিকের’ প্রশ্নে ক্ষেপে গেলেন সুচি


স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম

২৫ মার্চ,২০১৬


  তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং নিজ দেশ মিয়ানমারের জন্য ১৫ বছর গৃহবন্দী থাকায় পশ্চিমাদের নিকট ন্যায়পরায়ণতার বিশুদ্ধ বাতিঘর বলে সমাদৃত। কিন্তু মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্হী নেত্রী অং সান সুচির আরো একটি দিক আছে যা তার দেবীতুল্য ইমেজের সম্পূর্ণ বিপরীত।

বিবিসি টুডের বিখ্যাত উপস্থাপক পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাংবাদিক মিশাল হুসেনের নিকট দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সুচি তার চরিত্রের অপর দিকটি উন্মোচন করেন।

সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে সুচি মেজাজ হারান এবং তাকে বিড়বিড় করে ক্রোধের সাথে বলতে শোনা যায়, ‘একজন মুসলিম যে আমার সাক্ষাৎকার নেবে এটা আমাকে কেউ বলেনি।’

এশিয়ার এই দুই বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় যখন মিশাল সুচিকে তার দেশের রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো বৌদ্ধদের নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন করেন। মিশাল সুচিকে এই নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা জানানোর আহ্বান জানান।

৭০ বছর বয়সী সুচি তার দেশে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো অমানুষিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কখনো একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। সুচির অন্ধ সমর্থকও একথা স্বীকার করে যে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো বৌদ্ধদের বর্বর নির্যাতনের ব্যাপারে সুচির আচরণ সন্দেহজনক।



মিশাল সুচিকে ইসলাম বিরোধিতা ও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যার ব্যাপারে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানালে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। সুচি বলেন, ‘আমি মনে করি অনেক বৌদ্ধও বিভিন্ন কারণে দেশত্যাগ করেছে। এটা আসলে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনের ফল।’

মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের সহ্যই করতে পারে না। তাই ধারণা করা হচ্ছে, সুচি তার বৌদ্ধ সমর্থকদের বিরাগভাজন হতে চান না বলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মুখ বন্ধ রেখেছেন।

মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪% মুসলিম। দুর্ভাগ্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করা রোহিঙ্গা মুসলিমরা দেশটিতে ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করা হয় না এবং তাদের কোনো রাজনৈতিক অধিকারও নেই।

৪৩ বছর বয়সী মিশাল হুসেন বিবিসির রেডিও টুডে প্রোগ্রামের প্রথম মুসলিম উপস্থাপক। বিবিসির বৈচিত্র্যময়তার প্রতিশ্রুতির উৎকৃষ্ট উদাহরণ তিনি।

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ও ৩ সন্তানের জননী মিশাল হুসেন লন্ডনের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: