ব্যাংক ডাকাতির দৃষ্টি ফেরাতেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও তনু হত্যাকান্ড
স্বদেশসময় : বাংলাদেশ ব্যাংকের শতশত কোটি টাকা ডাকাতির
ঘটনা থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে নিতে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম ও তনু
হত্যাকান্ড নিয়ে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার
সংশ্লিষ্টতা ছাড়া সংবিধিবদ্ধ এলাকায় তনু হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়া সম্ভব নয়।
সোমবার যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান প্রমুখ।
সভায় বলেন, দেশে শতশত হত্যাকান্ড ঘটছে একটি হত্যাকান্ডেরও বিচার হচ্ছে না। এমনকি নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন, পিলখানায় সেনা হত্যাযজ্ঞ শেখ হাসিনাকে জানানোর পরও ঠেকানো যায়নি কিংবা ঠেকানো হয়নি। আর বাংলাদেশ ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ধামাচাপা দিতে এখন তনু হত্যার বিচার না করে পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন শেখ হাসিনা। কারণ কুমিল্লায় এমন একটি সংবিধিবদ্ধ এলাকায় শেখ হাসিনার ইন্ধন ছাড়া তনু হত্যাকান্ড সংঘটিত হতে পারে না।
সভায় আরো বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা বিষয়ে একটি বক্তব্য দেয়ার দায়ে যদি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হতে পারে তাহলে একই কারণে শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হতে পারে।
সভায় বলা হয়, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে বাংলাদেশ ব্যাংকে ডাকাতি করেছিলো শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে শেখ কামাল। এখন দেশ সেই ডাকাতদের কবলে। স্বীকৃত ব্যাংক ডাকাত শেখ কামালের বোন-ভাগিনা এখন লুটপাট করছে ব্যাংক। লুটেরারা হল-মার্ক গ্রুপের নামে সোনালী ব্যাংক থেকে লুট করেছে ৩ হাজার ৬শ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক থেকে ১১০০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংক থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা, ডেসটিনি আত্মসাৎ করেছে ৪ সগস্রাধিক কোটি টাকা। শেয়ার বাজারে শতকোটি টাকার কেলেংকারীতো রয়েছেই। লুটপাট অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮০০ কোটি টাকা ডিজিটাল পদ্ধতিতে গায়েব। আরো নাকি ২ বিলিয়নের খবর নাই। অথচ অথর্ব গভর্নর আতিউরের জন্য নাকি শেখ হাসিনার চোখের পানি পড়ে।
সভায় আরো বলা হয়, জনগণের শত শত কোটি টাকা লুট হলে শেখ হাসিনা চোখের পানি পড়ে না। হত্যাকোন্ডের শিকার শতশত মানুষের জন্য তার চোখের পানি পড়ে না। শেখ হাসিনার চোখে পানি পড়ে লুটেরাদের জন্য। এজন্য লুটরোদের বিচার হয় না। টাকা পাচারকারীদের সাজা হয় না।
সভায় বলা হয়, শেখ কামালের বোন-ভাগিনাদের কেনো বিচারের মুখোমখি হতে হচ্ছে না। এর জবাব রয়েছে, অর্থমন্ত্রী আবুল মালের সাক্ষাতকারে। ১৮ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকায় এক সাক্ষাতকারে আবুল মাল বলেছেন, রাজনৈতিক ব্যাপার-স্যাপার সব আলাপ করা যায় না।
সভায় আরো বলা হয়, এখন শেখ হাসিনা সারাক্ষণই হুমকী ধামকী দেন অমুকের বিচার হবে তমুকের বিচার হবে। কিন্তু নিজের পুত্র পরিবারের খুন, চুরি ব্যাংক ডাকাতির বিচার করছে না। কথায় বলে, চোরের মায়ের বড় গলা।
সভায় বলা হয়, দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে ব্যাংক ডাকাত সরকারকে আর সময় দেয়া যায় না। এই বাংলাদেশেই এই ব্যাংক ডাকাত ও খুনী চক্রের বিচার হবে। বিচার হবে বিরোধী দলের শতশত নেতাকর্মী হত্যার। মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার। বিচার হবে পিলখানায় সেনা হত্যাযজ্ঞের।
সভায় আরো বলা হয়, বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের পার্থক্য হলো- আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুর্নীতি লুটপাট আর ব্যাংক ডাকাতির রাজনীতি আর বিএনপির রাজনীতি হলো উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি।
‘মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের’ সংখ্যা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে, বিভিন্ন বইতে বিভিন্ন রকম তথ্য রয়েছে। ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সমাবেশে প্রসঙ্গক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যের সূত্র ধরে বিস্তারিত বক্তব্য দেন বক্তারা।
সভায় বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে ফেরার পথে লন্ডনে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে। তবে এই সংখ্যা কি শেখ মুজিব নিজেই বিশ্বাস করতেন? তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপনের জন্য কেনো তিনি ১৯৭২ সালের ২৯শে জানুয়ারি ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি তৈরী করেছিলেন। আবার কেনইবা ১৯৭৪ সালে কোনো কারণ না দেখিয়েই কমিটি বিলুপ্ত করে দিলেন? মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তি প্রস্তর যেটি শেখ মুজিব নিজেই উদ্বোধন করেছিলেন সেই স্মৃতি ফলকে কেনো মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা উল্লেখ না করে ‘লক্ষ লক্ষ’ উল্লেখ করেছেন। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদে গৃহীত সংবিধানের প্রস্তাবনায়ও শহীদদের নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা কেনো উল্লেখ করা হয়নি। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে শেখ মুজিব তার বক্তৃতায়ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের কোনো সংখ্যা উল্লেখ না করে কেন বলেছিলেন ‘লাখো লাখো শহীদ’। আবার শেখ হাসিনা চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ৩১ লাখ শহীদের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সভায় আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ১৯৭২ সালের ৩রা জানুয়ারি প্রথম টেলিভিশন ভাষণে বলেছিলেন, ১০ লক্ষাধিক মানুষের আত্মাহুতির মাঝ দিয়ে আমরা পশুশক্তির হাত থেকে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা বিধৌত বাংলাদেশকে স্বাধীন করে ঢাকার বুকে সোনালী রক্তিমবলয় খচিত পতাকা উত্তোলন করেছি। তার এই বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে, ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি দৈনিক বাংলা পত্রিকায়। ডক্টর এম এ হাসান যিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে গবেষণা করেছেন এবং গঠন করেছেন ‘ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। তার মতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ, এটি একটি অতিরঞ্জিত সংখ্যা এবং সঠিক সংখ্যাটি সম্ভবত ১২ লাখের কাছাকাছি হবে। মুুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের ভ্রাম্যমাণ কূটনৈতিক প্রতিনিধি মুহাম্মদ নুরুল কাদির তার ‘দুশো ছেষট্টি দিনে স্বাধীনতা’ বইয়ে লিখেন, একাত্তর সালের ১০ সেপ্টেম্বর ইরানের শাহেনশাহ মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলবী বরাবর লেখা এক পত্রে তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ৪০ লাখ বলে উল্লেখ করেছিলেন। ১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার অবজারভার ও মর্নিং নিউজ তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করে , ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ পাক বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে। অপরদিকে ১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি দৈনিক বাংলার ‘হুশিয়ার আন্তর্জাতিক চক্রান্ত’ শিরোনামে একটি রিপোর্টে বলা হয়, ‘দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশে যে তান্ডব চালিয়েছে তাতে ‘৩৫ লক্ষাধিক’ বাঙালি প্রাণ হারিয়েছে।
সভায় বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের কোনো সংখ্যা না উল্লেখ না করে তিনি শুধু বলেছিলেন বিভিন্ন বইতে বিভিন্ন বক্তব্য রয়েছে। এখন এসব তথ্য উপাত্তে দেখা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্য সত্য প্রমাণিত হয়েছে। তাহলে কেনো বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেয়া হলো? একই অভিযোগেতো শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও মামলা হওয়া উচিত। তারাতো মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখা নিয়ে একবার একেক কথা বলেছেন। অপরদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনের কথা।
সভায় আরো বলেন, এখন বরং প্রশ্ন করার সময় এসেছে, শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতাকামী মানুষ হত্যাকান্ডের শিকার হতো কিনা? সকল তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষনে দেখা যায়, ৭ মার্চ স্বাধীণতার ঘোষণা দিলে এতলক্ষ লোক হয়তো প্রাণ হারাতে হতো না। কারণ, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতাকামী জনগণের সংখ্যা ছিলো প্রায় ১০ লাখ। আর সেই সময় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তান উভয় অংশের সেনা-পুলিশ, ইপিআর এবং অন্যান্য প্রশিক্ষিত সবমিলিয়ে মাত্র ২০ হাজারের মতো। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে ঐক্যবদ্ধ পাকস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লোভে ২৫ মার্চ পর্যন্ত আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করে এ সময় পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানী থেকে পূর্ব পাকিস্তানে সৈন্য সমাবেশের সুযোগ করে দিয়ে ছিলেন। ২৫ মার্চ পর্যন্ত আলোচনার নামে শেখ মুজিবকে ব্যস্ত রেখে ১২ হাজার মাইল উড়ে এসে এ সময়ের মধ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে লক্ষাধিক সেনা জড়ো করে ই্য়াহ ইয়া খান।
সভায় প্রশ্ন্ন করেন, কেন এত লক্ষ সৈন্য বিনাবাক্য ব্যয়ে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে জড়ো করার সুযোগ করে দিলেন শেখ মুজিব?
৭ই মার্চ সম্পর্কে সভায় আওয়ামী ঘরানার বিভিন্ন্ন লেখকের লেখা থেকে উদ্বৃতি তুলে ধরেন। বর্তমানে চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক অবসরপ্রাপ্ত লেফট্যান্যান্ট কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী তার “এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম : ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১” বইতে লিখেন “অনেকেই আশা করেছিলেন ৭ই মার্চ নেতা (অর্থাৎ শেখ মুজিব) স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন, এমন আশা অনেকেই করেছিলেন। ৭ই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান, উপস্থিত রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রকে সাথে নিয়ে অগ্রসর হলে কয়েক’শ বা কয়েক হাজার প্রাণের বিনিময়ে হলেও ঢাকা সেনানিবাস দখল করা অসম্ভব ছিল না। কিন্তু সেদিন নেতা আমাদের, তথা সব বাঙালিদেরই হতাশ করেছেন। পিলখানাতে ৪টি উইং মিলে প্রায় ২৫০০ ইপিআর বাঙালি সৈনিকদের অবস্থান ছিল। তাছাড়াও ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ৪০০ সশস্ত্র পুলিশ। বেশ কয়েক শত আনসার ও মুজাহিদের অবস্থানও ছিল ঢাকায় যাদের সশস্ত্র করা হয়েছিল রাইফেল দ্বারা। অনেকেই মনে করেন যে, সঠিক নির্দেশ ও নেতৃত্ব পেলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলা অসম্ভব ছিল না। কিন্তু সময়োপযোগী সঠিক নেতৃত্ব ও নির্দেশের অভাবে পরবর্তীকালে বাঙালি জাতিকে অনেক মাশুল দিতে হয়েছে।” আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি পান্না কায়সার তার বই, “মুক্তিযুদ্ধ : আগে ও পরে” বইয়ে লিখেন “৭ই মার্চ ভাষণ শুনে ফেরার সময় শহীদুল্লাহ কায়সারকে বেশ চিন্ত্তিত দেখাচ্ছিল। নিজে নিজেই বলে যাচ্ছে, “আজই সমস্ত জাতিকে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়া উচিত ছিল।”
শাহরিয়ার কবীর “মওলানা ভাসানী : রাজনৈতিক জীবন ও সংগ্রাম” বইয়ের ভূমিকায় লিখেন “সমাজ বিশ্লেষণ ও করণীয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে মওলানা ভাসানীর নিজস্ব একটি বৈশিষ্ট্য ছিলো, যার দ্বারা এদেশের লক্ষ কোটি মেহনতি মানুষকে সহজে উদ্বুদ্ধ করা যেতো। যুক্তি আর আবেগকে তিনি একই সমান্তরালে প্রবাহিত করেছেন। কখনো তার বক্তৃতায় আবেগ বেশী থাকলেও সে আবেগ ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী বা শেখ মুজিবের মতো যুক্তিবর্জিত ছিলো না। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে- শেখ মুজিবের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বক্তৃতায় কোনো যুক্তি ছিলো না, ছিলো আবেগ। সাম্রাজ্যবাদের কাছে আত্মসমর্পণের পথ খোলা রেখেই তিনি সেই বক্তৃতায় স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী দিতে পারেন নি।” কামাল লোহানী তার “রাজনীতি মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীন বাংলা বেতার” কেন্দ্র বইয়ে লিখেন “গোলটেবিল বৈঠক ব্যর্থ হবার পর তিনি অর্থাৎ শেখ মুজিব সবাইকে সরে যেতে বললেও, নিজে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে কেনো থেকে গেলেন? কেনইবা মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হয়েও শত্রুপক্ষের হাতে ধরা দিলেন? এসব প্রশ্ন সহজেই উঠছে। যার কোনো যথার্থ জবাব মেলেনি। কামাল লোহানী আরো লিখেন “বিপ্লবের নেতা জনগণের মধ্যে থেকে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। এটাই দুনিয়াজোড়া রীতি। তিনি অর্থাৎ শেখ মুজিব কেনো ভাঙলেন এই রীতি, এটা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। নাকি তিনি এরেস্ট হয়েও জেলখানায় সংলাপের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন?”
সভায় বলা হয়, এসব তথ্য এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সকল দলীল প্রমাণে স্পষ্ট শেখ মুজিব নয় স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। রাজনৈতিক নেতৃত্ব স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হলে নিজেকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন শেখ মুজিবুর রহমান।
0 coment rios: