খালেদা জিয়া
স্বদেশসময়
টোয়েন্টিফোর ডটকম
:
বল এখন শাসক দলের কোর্টে এ মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
সরকারকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন, ‘সংঘাতের পথ ছেড়ে সংলাপের পথে সমস্যার
সমাধান করুন।’রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বিকেলে ইসলামি ঐক্যজোটের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। জনগণের সরকার নেই। সুশাসন নেই। সমস্ত প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। সবখানে নৈরাজ্য। আইন-শৃঙ্খলার সীমাহীন অবনতি ঘটেছে। কারও কোনো নিরাপত্তা নেই।
তিনি বলেন, দেশের সংকট নিরসন ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমি সরকারের প্রতি আলাপ-আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্ত বল বর্তমান শাসক দলের কোর্টে। তবুও আশা করি, সরকার সংঘাতের পথ ছেড়ে সংলাপের পথে সমস্যার সমাধান করবে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টা ৩৫ মিনিটে বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে আসেন। এ সময় ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা-কর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে তাকে শুভেচ্ছা জানায়। এরপর ৫টা ৫ মিনিটে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শুরু করেন।
দেশে গণতন্ত্র নেই মন্তব্য করে বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশে শান্তি, সুশাসন, গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার ফিরে আনতে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে, দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষায় আলেমসহ সবার সম্মান রক্ষায়, জাতীয় স্বার্থ ও মর্যাদা রক্ষায় আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, এই ঢাকার রাজপথে ওলামা মাশায়েখ, হাফেজ ও মাদ্রাসার গরীব শিক্ষক-ছাত্রদের রক্ত ঝরেছে। সেই ত্যাগ যেন বৃথা না যায়।
ভিশন-২০৩০ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, কাউন্সিলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও সর্বশেষ রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরেছি। তাই দেশে যে অসুস্থ্য রাজনৈতিক ধারা চালু হয়েছে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেখাতে হবে নতুন সম্ভাবনার পথ। ফলে জাতির বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সুচিন্তিত ও বাস্তবমুখি কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। আর ওই কর্মসূচিকে সামনে রেখে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
এ সময় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা বিপর্যস্তের কারণে তরুণরা বিপথগামী হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।
বিএনপি প্রধান অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় অর্থনীতি ছত্রখানা হয়ে গেছে। শেয়ারবাজার ও ব্যাংকগুলো লুট হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও জনগণের অর্থ-সম্পদ নিরাপদ নয়। ডিজিটাল ডাকাতি করে সে অর্থ লুটে নিয়ে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা হচ্ছে।
ভিনদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসনে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি বিপন্ন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় ক্ষমতাসীনদের কোনো উদ্যোগ নেই।
হিংসা, হানাহানি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান ইসলামে নেই মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ইসলাম শান্তি, মজলুম, ইনসাফ, সুশাসন. মৈত্রী, সাম্য, মানুষের অধিকার ও নিরাপত্তার পক্ষে। কিন্তু মুষ্টিমেয় কিছু বিপথগামী লোক সন্ত্রাস, প্রতিহিংসা ও নিষ্ঠুর পথ বেছে নিয়ে আজ বিশ্বব্যাপী মুলমানদের অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। বাংলাদেশেও পবিত্র ইসলামের নামে বিপথগামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করলে আমরা তাদের কঠোর হাতে দমন করতে পেরেছিলাম।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুর রকিবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল করিম খান, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদী, মাজেদ আতাহারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
0 coment rios: