বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬

অপরাধী ধরার সফটওয়্যার এখন বাংলাদেশে


অপরাধী ধরার সফটওয়্যার এখন বাংলাদেশে
স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম: অপরাধীকে ধরতে অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হিমশিম খেতে হয়। কেউ কেউ থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। অনেকে তাদের দেখলেও, প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা কাজে লাগে না।

এ সমস্যা সমাধানে এবার এমন একটি সফটওয়্যার আনা হয়েছে, যা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুযায়ী ওই অপরাধীর স্কেচ আঁকা যাবে। এরপর সেই স্কেচ মিলিয়ে অপরাধীকে পাকড়াও করা হবে। সম্প্রতি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু করেছে।

যদিও এ প্রযুক্তি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুলিশ ব্যবহার করছে। তবে বাংলাদেশ এই প্রথমবারের মতো এ প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্পেশাল পুলিশ সুপার আহসান হাবীব পলাশ রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ইংল্যান্ড থেকে এ সফটওয়্যার কিনতে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।  পিবিআইয়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের সময় এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে।.

প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে সন্দেহভাজন অপরাধীর মুখের বৈশিষ্ট্য, বিভিন্ন চিহ্ন, চুলের রং ও বৈশিষ্ট্য, চোখের রং, ভ্রুসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বর্ণনা জেনে তার ভিত্তিতে একটি স্কেচ তৈরি করা হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে একজন মানুষের মুখায়বের প্রায় হুবহু প্রতিচ্ছবি করা হয়। সবশেষ প্রত্যক্ষদর্শীদের তা দেখানো হয়। তারা যদি বলে, হ্যাঁ ঠিক আছে, তখন সেটা নিয়ে অভিযান শুরু করা হয়।

আহসান হাবীব পলাশ বলেন, প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, সদ্য চালু করা টুল সন্তোষজনক ফলাফল দিয়েছে। সরাসরি ব্যবহারিক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এটার সঙ্গে পরিচিতি হবে এবং এটি আরো ভালো ফল দেবে। এটি কার্যকর করার জন্য কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে আরো বেশি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

এটা শুধু পিবিআই কেন, অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বেসামরিক নাগরিকরাও এ ধরনের টুল ব্যবহার করতে পারেন, যদি তারা এটা প্রয়োজনীয় মনে করেন। আশা করা যায়, এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে আগের চেয়ে আরো দ্রুত ফৌজদারি মামলার সমাধান করা যাবে।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়্যারম্যান অধ্যাপক জিয়া রহমান জানান, সফটওয়্যারের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। তবে এটি এখন ফৌজদারি মামলায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে।এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। এটি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থারও ব্যবহার করা দরকার।

এ ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য পিবিআইকে সাধুবাদ জানান মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধতত্ত্ব ও পুলিশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক। তিনি রাইজিংবিডিকে জানান, এটি অপরাধী শনাক্ত করার জন্য একটি সহায়ক হাতিয়ার হতে পারে। তবে দেশে একটি অপরাধ ডাটাবেস অথবা একটি জাতীয় অপরাধী প্রোফাইলিং ব্যবস্থার অ্ভাব অনেক দিন ধরেই রয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ ধরনের সফটওয়্যার চালুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি অপরাধের মাত্রা কমাতে সহায়তা করবে।
 

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: