রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৬

ঘুরে এলাম উঠ দুম্বা আর খেমার দেশ কাতারে:ডি. এম. সাকলায়েন


স্বদেশসময়টোয়েন্টিফোরডটকম



মধ্য প্রাচ্যের উপদ্বীপ খ্যাত দেশ কাতার যার অর্থনীতি জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরশীল কারণেই রাতারাতি ধনী দেশে পরিণত হয়েছে দেশটির রপ্তানি আয়ের ৮৫ ভাগই আসে পেট্রোলিয়াম রপ্তানি থেকে কাতারের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২০ হাজার কোটি ডলার আর মাথাপিছু আয় ৯৩ হাজার ৪০০ ডলার ১১,০০০ হাজার বর্গ কি. মিটারে কাতারীয়ান মাত্র লাখ কিন্তু প্যালেস্টাইন, ইজিপশিয়ান, ইয়েমেনী, পাকিস্তানী, ইনডিয়ান, ইরানী বাংলাদেশী মিলে ২০ লাখের বেশী লোক বসবাস করছে আমাদের মত ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়ে এত দ্রুত মধ্য প্রাচ্যের সবচেয়ে উন্নত দেশে পরিণত হল তা দেখার উৎসাহ-উদ্দিপনা অনেক আগে থেকেই ২০ জানুয়ারী১৬ বুধবার রাত টা ৫৬ মিনিটের দিকে বিমান যাত্রা শুরু করলামএবারের সফর সংঙ্গী আমার কোম্পানী বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেন অত্যন্ত হাসিখুশি বন্ধুভাবাপন্ন অতি উৎসাহী মানুষ তিনি এরকম মানুষের সাথে ভ্রমণ খুবই অনন্দদায়ক হয় রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে আবুধাবী বিমান বন্দরে পৌঁছালাম ঘন্টা দেড়েক পরে আবার কাতারের উদ্দেশে বিমান পরিবর্তন করলাম এবং এক ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম দোহা বিমান বন্দরে তখনো শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে হালকা ঠান্ডা বাতাস বইছে যাত্রীদের আনাগোনায় বিমান বন্দর বেশ মুখোরিত ভাবলাম একটু বিশ্রাম নিয়ে নিই বসে আছি, দেখছি চারিদিকে হঠাৎ মনে হল আমাদের হোটেলের পক্ষে কেউ আছে কি না একটু জেনে নেই দেখি কেথরিন নামে কেনিয়ার একটি মেয়ে অপেক্ষা করছে
 
 আমাদের রিসিভ করার জন্য কেথরিন নিয়ে গেল বাইরে দাঁড়ানো মিনি বাসের কাছে ঘানার ছেলে মরিছ ডানে বামে সবকিছু দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ফাইভ স্টার হোটেল রোটানার দিকে চালক মরিছ খুবই ভাল ছেলে হাসিখুশি প্রাণবন্ত প্রথমেই চোখে পড়লো কাতারের সুদীর্ঘ কয়েক লেন বিশিষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তার দিকে প্রথম অনুভুতি খুবই উত্তেজনা মনোমুগ্ধকর রোটানায় পৌঁছে কিছুক্ষণ পরেই বের হলাম রোটানার লবিতেই দেখা হলো মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আজমল ভাইয়ের সাথে তিনি আমাদেরকে নিয়ে গেলেন হোটেল ক্রাউন প্লাজায়, এখানে দুদিন ব্যাপী রিহ্যাব কাতার ফেয়ার ২০১৬ অনুষ্ঠিত হবে পরিদর্শন শেষে বাঙালী যেখানে বেশী থাকে, সে এলাকায় ঘুরতে গেলাম এলাকাটির নাম নাজমা সেখানে অনেকের সাথে কথা হল, ভাব বিনিময়ে প্রাণটা জুড়িয়ে গেল বিদেশের মাটিতে নতুন পরিবেশে দেশী ভাইদের আবেগ উৎসাহ গুলো অনুভবের বিষয় যা দুকলম লিখে প্রকাশ করা যায় না দুপুরের খাবার বাঙালী হোটেলেই খেলাম সব কিছুই এখানে পাওয়া যায় মনে হলো বাংলাদেশেই কোন রেস্টুরেন্টে বসে খাচ্ছি পড়ন্ত দুপুর তাই হোটেলে ফিরে একটু ঘুমিয়ে নিলাম রাতে আমাদের স্টল এর কাজ শেষে আবার একটু ঘুরলাম ২২ তারিখ সকাল টার মধ্যে সবাই মিলে মেলার স্টলে চলে এলাম ১১টার দিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হল কাতারের বাংলাদেশী এ্যাম্বাসেডর জনাব আসুদ আহম্মেদ প্রধান অতিথি আর অন্যান্য লোকজনে ভরপুর ছিল হলরুম সবার উৎসাহ উদ্দিপনা আমাদের ভাল লাগলো, বিকালে দিকে প্রচুর ভিড় হলো সবার চেয়ে আমাদের স্টলে বেশী লোকজন ছিল এরই মধ্যে দেখা হল সুলায়মান খানের সাথে কাতার আসার আগে একমাত্র তার সাথেই কথা হয়েছিল আমার অফিস সহকর্মী আলম ভাইয়ের মাধ্যমে কাতার জালালাবাদ সংগঠনের নেতা নজরুল ভাই আর আনু ভাইসহ অন্যান্য নেতাবর্গ খুবই সহযোগিতা করেছেন বেশ কয়েকটি কারণে আমাদের প্রতি সকলের বেশী আকর্ষণ ছিল সকল গ্রাহকের সংঙ্গে আলাপ আলোচনায় কখন যে রাত ১০ টা বেজে গেল তা বুঝতেই পারিনি মেলার আয়োজক কমিটি পূর্বেই জানিয়েছিল মেলার শেষে আরব সাগর ঘুরতে যাবে রাত ১১ টার দিকে এক বিশেষ পানশীতে আরব সাগর ভ্রমণ শুরু হল ভ্রমণ শুরুর আগেই পরিবেশন করা হল রাতের বিশেষ খাবার বারবিকিউ করা সামুদ্রিক শেয়ারী মাছ আর রুটি সারাদিনের কর্ম ব্যস্ততা আর পরিশ্রম শেষে এরকম নতুন মাছের বারবিকিউ খাওয়ার ধুম পড়ে গেল সবার মাঝে বেশ সুস্বাদু মজাদার আজও মুখে লেগে আছে খাওয়ার পর সবাই যেন তরতাজা হয়ে উঠলেন সাউন্ড সিস্টমে মিউজিক বাজছে, কেউ কেউ নাচার ভংগি করছেন, সুরের ঢেউ সবাইকে ছূঁইছে ফেসবুকের এই যুগে সেলফি আর ছবির প্রতিযোগিতা সব খানেই, ছবি তুলছি আর আপলোড দিচ্ছি এভাবে সাগর ভ্রমণ শেষে রাত .৩০ মিনিটে স্টার হোটেল রোটানায় ফিরলাম পরের দিন সকাল টার মধ্যেই স্টলে পৌঁছালাম বিভিন্ন মানুষজন এসেছেন, কথা বলেছি তাদের সেবা দিয়েছি আজকেই মেলার শেষ দিন সমাপ্তি অনুষ্ঠান আয়োজন হলো আরেকটি হোটেলের বল রুমে আলোচনা অনুষ্ঠান চলছে, পাশাপাশি খাওয়া দাওয়া চলছে হঠাৎ স্পার্কিং ড্রিমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজওয়ান মাইক্রোফোন নিয়ে বলল, ভাই আপনি কিছূ বলেন আমি সার্বিক চিত্র তুলে ধরে আমার মতামত ব্যক্ত করলাম বিশেষ করে স্পার্কিং ড্রিমের যুবকেরা এত সুন্দরভাবে ইভেন্টটি শেষ করেছে এজন্য সবাইকে প্রশংসা করতেই হয় রফিকুল রাফিসহ নাম অজানা অনেকেই কঠোর পরিশ্রম করতে দেখেছি রাত প্রায় ১২.৩০ টা বেজে গেল রুমে ফিরে আমাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় জনাব নজরুল ইসলাম স্যারের সাথে দেখা করলাম, সামনের দিনের পরিকল্পনা নিয়ে শ্রদ্ধেয় এমডি স্যার পরামর্শ দিলেন কয়েকদিন বেশী থেকে লোকজনের সাথে মিটিং-সিটিং করতে, তাতে আমাদের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য আরো বেশী সফল হবে সকালে ঘুম থেকে উঠে বুফে নাস্তা করলাম নতুন লোকজনের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম আর অবসর সময়ে সাক্ষাতের জন্য সময় সূচী ঠিক করলাম সন্ধ্যে টা থেকে শুরু করে ১০টা পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে কয়েক গ্রপের মিটিং হলো ১০টার পরে বিশেষ দাওয়াত দিয়েছিলেন সুলায়মান খান এমডি স্যারের সম্মানে একটি ইনডিয়ান রেস্টুরেন্টে ভোজন শেষে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিদায় দিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিলেন সুলায়মান ভাই এখন রাত প্রায় ১২টা বেজে গেল আজ আর বের হলাম না শরীরও ক্লান্ত লাগছে বেশ কদিন টানা পরিশ্রম করছি রুমে গেলাম ফ্রেশ হয়ে লবিতে কিছূক্ষণ সময় কাটালাম এরপর ঘুম সকালে উঠে খুব আরাম করে নাস্তা করলাম ইতোমধ্যে অনেকের সাথে ফোনে কথা হয়েছে যারা মেলাতে এসেছেন রোটানা থেকে ১২টার দিকে চেক আউট হলাম
 
উঠলাম লাভী-লা নামক একটি হোটেলে। যেখানে বাঙ্গালীরা বেশী থাকেন জায়গাটির নাম নাজমা। নাজমায় এসে সকলের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলাম। এই হোটেলে আরও অনেকেই আছেন তাদের সাথে আলাপ আলোচলা করলাম। বেলা বেশ হল। হোটেল লাভী-লা পাশেই আনন্দ রেস্টুরেন্ট, দুপুরের খাবার শেষে একটু বিশ্রাম নিলাম। সুলায়মান ভাই ৪টার দিকে আসলেন। নিজের গাড়ী নিয়ে খুব আরাম আয়েসে কাতারে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। অত্যন্ত সৎ পরিশ্রমী অতিথি পরায়ন বুঝলাম কঠোর প্রচেষ্টায় পর্যায়ে এসেছেন আমাদের নিয়ে গেলেন পার্ল কাতার দেখানোর জন্য, সূর্য তখন পশ্চিমের আকাশে ঢেলে পড়েছে সুদীর্ঘ রাস্তা চারপাশের সুন্দর পরিবেশ, বাড়ী-ঘর, সুবিশাল অট্রলিকা, আবর সাগরের নীলাভ বর্নের পানি, নয়নাভিরাম পানশী, সন্ধ্যোর আলো ঝলমলে পরিবেশ ভীষণ আন্দোলিত করল। পার্ল কাতার দেখতে দেখতে অনেকটা সময়কেটে গেল। আজকেও সাক্ষাতের কথা আছে সানোয়ার এবং মাকসুদ ভাইয়ের সাথে সন্ধ্যে ৭টার পর। ফোন করলাম তারা সময় দিলেন দোহা কমার্সিয়্যাল ব্যাংকের পাশে বসার জন্য। ফিরে এসে এখানেই একটি রেস্টুরেন্টে বসলাম। আমাদের লেকসিটি প্রকল্প নিয়ে অনেক কথা হল রাতও বেশ হল, সোলায়মান ভাই সাথেই আছেন। আমাদের পৌঁছে দিলেন হোটেলের কাছে একটি মার্কেটে। প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করলাম। হোটেলে ফিরে গ্রীন ল্যান্ড কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে বসলাম। অনেক আলাপ আলোচনা করলাম আবাসন ব্যবসা নিয়ে। প্রত্যেক সময়টুকু সর্বাত্বকভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। মনে হচ্ছে সময় কেন জানি দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, নতুন নতুন গ্রাহক আর নব্য বন্ধুদের সাথে ব্যবসায়িক আলাপ ফাঁকে ফাঁকে একটু কাতার দেখতে দেখতে। পরের দিন সকাল সকাল উঠে পড়লাম দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী আসবেন বলে। সকাল ১০ টায় এলেন তিনি। তার গাড়ীতেই দ্রুত বের হলাম। শহরের ভিতর দিয়ে যাচ্ছি। আর ভাবছি..... কি সুন্দর করে নিজের দেশকে মনের মত করে গড়ে তুলেছেন কাতারীয়ানরা। এখানে প্রথম পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৫৯ সালে। এখন স্বাস্থ্য-প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি প্রাথমিক শিক্ষাসহ উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বিনামূল্যে। বিশ্বখ্যাত আল জাজিরা টিভি চ্যানেল এখানে। অপরাধের মাত্রা একাবারেই কম। স্পোর্টস-খেলা ধুলার পৃষ্টপোষকতায় সরকার অগ্রগণ্য ভূমিকা নিয়েছে। অথচ আরব উপদ্বীপের মত এটি উত্তপ্ত শুষ্ক মরু এলাকা এটি। এখানে ভূ-পৃষ্ঠস্থ কোন জলাশয় নেই এবং প্রাণী উদ্ভিদের সংখ্যা খুবই কম সে জায়গায় আজ বিশ্বের এত উন্নত ভাবতেই অবাক লাগে। জোহর নমাজের সময় হওয়ায় গেলাম জাতীয় মসজিদে। কি সুন্দর বিশাল আকারের মসজিদ! নমাজ পড়ে দু করতে পেরে মনের মনোবল আরো বেড়ে গেল। এখানে নিরাপত্তা কর্মী কেনিয়া ছেলে আব্দুল আজিজের আন্তরিকতার কথা ভুলার নয়। কিছু বাংলায় লেখা বই উপহার দিলেন। পথের মধ্যে যোগ হলেন মাসুদ ভাই, অত্যন্ত ভ্রমণ পিপাসু আর বন্ধুসুলভ মানুষ। সবাই মিলে চলে এলাম দেলোয়ার ভাইয়ের বাসায়। খুবই আপ্যায়ন প্র্রিয় তার পরিবার। দুজন ছেলে আর ব্যবসায়িক ব্যস্ততা নিয়ে বেশ ভাল আছেন। ভাবীর হাতের উটের গোশত্ আর সামুদ্রিক মাছের বারবিকিউ স্বাদ আজও অনুভব করি। এখানকার শেখের সাথে খুব ভাল সম্পর্ক তার। মোঃ আল শামরী নামের এক মেজর এর সাথে পরিচয় করালেন। দেখে অভিভূত হলাম তাদের আথিতেয়তায়। তিনি আরো নিয়ে গেলেন মরুভূমির উঠ দুম্বা খেমা দেখানোর জায়গায়। সৌদি আরব যাওয়ার রাস্তায় লং ড্রাইভ এর মত অনেক দূর পর্যন্ত গেলাম। এরপর হুমায়ুন ভাইয়ের বাড়ীতে সোলায়মান গনি ভাইয়ের সাথে ব্যবসায়িক কাজকর্ম সেরে হোটেলে ফিরেছি অনেক রাতে। সকালকে কাজে লাগাতেই সাগর ভাইকে সাত সকালেই আসতে বলেছি। পরদিন নাস্তা শেষ করতেই সাগর ভাই চলে এলেন। এখানে কাফকো অফিসে চাকরী করেন। ঢাবি ছাত্র ছিলেন, ভীষণ মেধাবী পরিশ্রমী। ভাল চাকুরী করেন বিধায় সচ্ছলতা বেশ। তিনি নিয়ে গেলেন কাতারের সবচেয়ে বড় ভিলাজিও মার্কেটে পথের মধ্যে নেমে পড়লাম যেখানে ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা হবে। কি চমৎকার জায়গায় এটি! যেদিকে তাকাই সেদিকেই নজরকাড়া সৌন্দর্য। অথচ ১৯৩০ সালে মুক্ত বাজারে ধস নামার আগেও কাতারে জীবন-যাত্রা বেশ কঠিন ছিলো। ক্ষুধা-দারিদ্র, অপুষ্টি বিভিন্ন রোগ ছিলো সেখানে নিত্যদিনের সঙ্গী। এখানে ১৯৫২ সালে কাতারে প্রথম স্কুল চালু হয়েছে অথচ বিশ্বখ্যাত জর্জওয়াশিংটন, নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির মতো ক্যাম্পাস এখন কাতারে। যাই হোক ঢুকে পড়লাম ভিলাজিও মাকের্টের ভিতরে। দেখেই চোখ জুড়িয়ে গেল। এতো বড় মার্কেট! বিশ্বের সব নামিদামি ব্যান্ডের দোকানগুলো এখানে। বিশালাকার এই মাকেটের বিশেষ দিক হলো, এমনভাবে এই মার্কেটের ছাঁদ করেছেন, যেন মনে হয় খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেক শৈল্পিক কারুকার্য, কিভাবে ছাঁদ করেছেন তা বুঝাই দায়। নিজের জন্য ঘড়ি জুতাসহ কিছু কেনাকাটা করলাম। ভেতরের সব দোকানগুলো ঘুরলাম। দুপুরের খাবার ম্যাকডোনাল্ডে খেয়ে নিলাম। আশেপাশে ছোট্র ছোট্র শিশুদের খাওয়া-দাওয়া, দৌড়া-দৌড়ি ভীষন মন কাঁড়ছে। ওদের সাথে মজা করলাম। দুপুর গড়িয়ে বিকেল টার মত বাজে। সোলায়মান ভাই আসবে টার পর। এক কথার মানুষ, তিনি ঠিক সময়েই চলে আসবেন তাই তাকে ফোন দিয়ে দেরীতে বের হতে বললাম। আমরা ভিলাজিও মার্কেট থেকে বেড়িয়ে লুলু মাকের্টের দিকে যাচ্ছি আজ ভোর টার সময় আমাদের ফ্লাইট। ভেবেছি রাত ১২ টার দিকে এয়ারপোর্টে যাবো। তাই সকল জিনিসপত্র গুছিয়ে চেক আউট করে হোটেলে লাকেজ রেখে দিয়েছি। ভাবছি আর কি কেনাকাটা করতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কিছু বাঁকী বয়ে গেছে কি? অবশেষে লুলু মার্কেটে ঢুকে সব কিনে ফেললাম। হোটেলে ফিরতেই চলে এলেন সোলায়মান ভাই। নতুন কিছু কেনাকাটায় ব্যাগে ঢুকানো অনেক কষ্ট হলো তারপরও কাভার ফেলে দিয়ে সকল জিসিপত্র ভালমত ঢুকিয়ে হোটেল লা-ভিলা থেকে বিদায় নিলাম। সোলায়মান ভাইয়ের গাড়ীতে ঘুরছি। হাতে সময় মাত্র ঘন্টা চারেক। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলাম, খুব ভাল লাগছে। কেএফসি তে বসে সবাই খেলাম। সময় পেরিয়ে গেল দ্রুত। সোলায়মান ভাই পৌঁছে দিলেন এয়ারপোর্টে। তিনি আমাদের জন্য যা করেছেন তা আজীবন মনে থাকবে। বিদায় বেলায় শুধু ধন্যবাদ না দিয়ে কৃতজ্ঞচিত্রে হাসিমুখে বললামভালো থাকবেনদেশে আবার দেখা হবে। আবুধাবী হয়ে পৌঁছে গেলাম হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রাত টার দিকে। এভাবেই আমার অভিজ্ঞতায় যুক্ত হলো পারস্য উপসাগরের আরব উপদ্বীপের পূর্ব উপকূল থেকে উত্তর দিকে প্রসারিত বিশ্বের কাছে মুহূর্তে সবচেয়ে ধনী দেশ কাতার দেখা। যার দক্ষিণে সৌদি আরব এবং পশ্চিমে দ্বীপরাষ্ট্র বাহরাইন


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: