বিরাট কোহলির বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হওয়ার আগে আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে অনেক কথাই বলেছেন বাংলাদেশের বিস্ময়-বালক স্বল্পভাষী মুস্তাফিজুর রহমান। যার মধ্যে একটি বিরাট অংশ জুড়েই আছে বিরাট কোহলি প্রসঙ্গ।
মুস্তাফিজুর রহমানের চোখে বিরাট কোহলি অসাধারণ একজন ব্যাটসম্যান। কোহলিকে নিয়ে কিছু বলতে বলা হলে মুস্তাফিজ বলেন, ‘কোহলি দাদাকে নিয়ে আমি বলার কে? আমার বলাটাই তো ধৃষ্টতা হয়ে যাবে। তবে এটুকু বলতে পারি যে, ওর সবচেয়ে যেটা আমাকে টানে তা হলো আগ্রাসন। আর টেকনিকের দিক থেকে তুলনাহীন। ব্যাটিংয়ে যার কোনো খুঁত নেই বললেই চলে।’
এই জবাবের পরও প্রশ্নকর্তা মুস্তাফিজুরকে আরো ঘাঁটালেন। বললেন, ‘কোহলিকে আপনি এত সম্মান করেন। কিন্তু ভারত বনাম বাংলাদেশ খেলা হলে তো আপনাদের দুজনকেই যুদ্ধে নামিয়ে দেওয়া হয়। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট থেকে মিডিয়া, সব জায়গাতেই চলে। অস্বস্তি হয় না?’
মুস্তাফিজুর বললেন, ‘আমি সেসব নিয়ে কী বলব? সব ভুলে আমার কাজটা করি। কোহলি দাদাও নিশ্চয়ই তারটা করেন।’
অবশ্য প্রশ্নকর্তা সাক্ষাত্কারের শুরুতেই বিরাট কোহলির জন্য আজকের ম্যাচে কোনো স্পেশ্যাল প্ল্যান আছে কি না- জানতে চাইলে মুস্তাফিজুর বলেন, ‘আমি তো খেলা নিয়ে ভাবি। আলাদা করে কাউকে নিয়ে ভাবতে যাই না তো। যদি কাল (আজ) খেলি, সেরাটা দেব- এটুকু বলতে পারি।’
প্রশ্নকর্তা আবার বললেন, ‘আপনি বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকজন বোলারের একজন, যিনি কোহলিকে ঝামেলায় ফেলেছেন। যদিও উইকেট পাননি।’
জবাবে মুস্তাফিজুর বললেন, ‘আমি তো উইকেট পাওয়ার জন্য খেলি না। বোলিং করে আনন্দ পাওয়ার জন্য খেলি। উইকেট পেলে ভালো লাগে। আর আমার মনে হয়, যে বলটা আমি করি সেটা খেলতে সবারই অসুবিধে হয়। দাদারও হয়।’
এ ছাড়া সাক্ষাত্কারে আরো কিছু ব্যক্তিগত প্রশ্নের মুখেও মুস্তাফিজুরকে পড়তে হয়। সেসবের জবাবে যা বললেন তা এরকম- এটা তার প্রথম আইপিএল ঠিকই। কিন্তু ভারতে এটাই প্রথম আসা নয়। বিশ্বকাপে এসেছেন। বেঙ্গালুরুতেও ঘুরে গিয়েছেন। শহরের কয়েকটা জায়গা চিনেও ফেলেছেন। টিমে মিশে যেতেও কোনো অসুবিধে হয়নি। সব মিলিয়ে ভালোই লাগছে তার। অল্পস্বল্প ইংরেজি আর হিন্দি দিয়ে সবার সঙ্গে কমিউনিকেট করছেন। চেষ্টা করছেন ভাষা দুটো দ্রুত শিখে ফেলার। আর বাংলা নববর্ষে বাড়ি থাকবেন না, মন খারাপ করছে। কিন্তু কিছু করার নেই।
আর কাটারের ঘষামাজা চলছে। চেষ্টা করছেন আরো ভালো করে তোলার। স্লোয়ার কাটার প্রসঙ্গে বললেন, ‘পেসারদের ক্যাম্পে আমাকে বিজয় ভাই (এনামুল হক বিজয়) বলেছিলেন, তুমি কাটার পারো? তা আমি বলেছিলাম, করিনি কখনো। চেষ্টা করে দেখতে পারি। তার পর দেখলাম ওটা হচ্ছে। আমার আপনাআপনিই ওটা হয়। হাতে ধরে কেউ শেখায়নি। তার পর থেকে ওটা নিয়ে আরো খেটেছি।’
এবার শেষ প্রশ্ন- ধরা যাক, বাংলাদেশ নেটে আপনি আর কোহলি দুজনেই আছেন। মনে হয় না, সে রকম কেউ থাকলে এত দিনে আপনার কাটারগুলো আরো ধারালো হয়ে যেত?
মুস্তাফিজ বললেন, ‘হ্যাঁ, সেটা পারত। উনি যে মাপের ব্যাটসম্যান, তাতে নেটে ওর বিরুদ্ধে বল করতে পারলে নিজেকে আরো নিখুঁত তো করে তুলতেই পারতাম। বুঝে যেতাম, কোন কাটারটা আরো ধারালো করতে হবে আর কোনটায় উইকেট আসবেই আসবে।’
0 coment rios: