স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম: নির্বাচনের ফল
যা-ই হোক, ‘সিগন্যাল’-এর
একটা
দফারফা
হয়ে
গেল।
‘সিগন্যাল’—বাফুফে
নির্বাচনে বড়
আলোড়ন
তোলা
এক
শব্দ।
রাস্তায় তার
পরও
লাল-সবুজ বাতিতে এর
মহিমা
বোঝা
যায়,
থামা-চলা নিয়ন্ত্রণ করা
যায়।
তবে
বাফুফে
নির্বাচনের সিগন্যাল বড়
দুর্বোধ্য। নির্বাচনের দুই
দিন
আগেও
এটি
বেশ
ভুগিয়েছে। নাস্তানাবুদ করেছে
কাজী
সালাউদ্দিন ও
তাঁর
প্যানেলকে আর
বিভ্রান্ত করেছে
বাকি
সবাইকে। বিভ্রান্তিও একদম
সর্বোচ্চ পর্যায়ে। চেনা
লোক
হন্তদন্ত হয়ে
হঠাৎ
খবর
দেন,
‘ওমুক
ভাইয়ের
ভোটের
খেলা
শেষ।
সিগন্যাল নাই।
একটু
পরেই
বসে
পড়ার
খবর
পাবেন।’
তাই
তো,
সেই
ভাইয়ের
মুখ
যে
শুকিয়ে
গেছে!
কয়েক
ঘণ্টা
বাদেই
আবার
সেই
মুখে
স্বাভাবিক রক্ত
চলাচল।
লালবাতি বোধ
হয়
সবুজ
হচ্ছে।
সিগন্যালের এমন
খেলা
নিত্য
ঘটনা
হয়ে
উঠেছিল। গৌণ
হয়ে
পড়েছিল
নির্বাচন, ভোটাভুটির যেন
প্রয়োজন হবে
না
আর।
কিন্তু
৩০
এপ্রিল
আসতে
আসতেই
সব
অদৃশ্য
বাতি
নিভে
গিয়ে
নির্বাচনই সত্যি
হলো।
২৯
দিনের
লম্বা
‘এপ্রিল
ফুল’
শেষে
আজ
ফুটবলের ভোট।
গোপন
ব্যালটে বাফুফে
নির্বাচনে আগামী
চার
বছরের
ফুটবল
ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হবে।
প্রথমবারের মতো
বাফুফে
ভবন
ছেড়ে
র্যাডিসন হোটেলে গিয়ে উঠেছে
ফুটবলের ভোট।
পাঁচ
তারা
হোটেলে
নেওয়ার
কারণও
নাকি
ভোট
পণ্ড
করে
দেওয়ার
ভয়।
সেই
যে
ভয়
দিয়ে
শুরু,
এরপর
হুজুগে
মানুষের গুজবের
সংক্রমণে ফিফা
নিষেধাজ্ঞার ভয়ও
পেয়ে
বসেছিল
ফুটবলকে। একমাত্র নির্ভীক চরিত্র
মেজবাহ
উদ্দিন,
চারদিকে যতই
শঙ্কা
প্রধান
নির্বাচন কমিশনার ঠিক
ততটাই
আশাবাদী। হুমকি-ধমকি এবং নিরাপত্তাহীনতার ইস্যুগুলোকে লঘু
করে
তিনি
১৩৪
জন
ভোটারের নির্বাচনকেই বড়
করে
দেখছেন। ভোটারদের মধ্যে
সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ
জেলা
ও
বিভাগীয় ফুটবল
অ্যাসোসিয়েশনের ৬৭
ভোট।
তাঁরা
কমবেশি
জোটবদ্ধ এবং
প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে তাঁদের
ভোটকেই
গুরুত্বপূর্ণ ধরা
হয়।
বাকিগুলোর মধ্যে
ঢাকার
বিভিন্ন ক্লাবের ৫৩টি,
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি,
শিক্ষাবোর্ডের পাঁচটি
এবং
কোচেস
অ্যাসোসিয়েশন, রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন ও
মহিলা
ক্রীড়া
সংস্থার একটি
করে।
তাঁদের
ভোটেই
নির্বাচিত হবে
ফুটবল
ফেডারেশনের ২১
সদস্যের কমিটি।
ভোটের
আগেই
অবশ্য
বিনা
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিনিয়র
সহসভাপতি নির্বাচিত হয়ে
গেছেন
আব্দুস
সালাম
মুর্শেদী। নির্বাচনী ময়দানে
মুর্শেদী বরাবরই
ফেভারিট, এর
পরও
এই
পদ
থেকে
তিন
হেভিওয়েট মনজুর
কাদের,
লোকমান
হোসেন
ভূঁইয়া
ও
দেওয়ান
শফিউল
আরেফিন
টুটুলের সরে
দাঁড়ানোটা বড়
রহস্যময়। এই
একটি
পদ
বাদে
সভাপতিসহ বাকি
২০টি
পদের
জন্য
আজ
লড়ছেন
৪৬
জন।
সভাপতি
পদে
চারজন,
চার
সহসভাপতি পদে
১০
জন
আর
১৫টি
সদস্য
পদে
৩২
জন
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোট
হবে
দুপুর
২টা
থেকে
বিকেল
৫টা
পর্যন্ত।
ব্যালটে সভাপতি
পদে
চারজনের নাম
থাকলেও
এরই
মধ্যে
দুজন
দুই
দিকে
সমর্থন
দেওয়ায়
শেষ
লড়াইটা
দ্বিমুখী হয়ে
গেছে।
গোলাম
রব্বানী হেলাল
গেছেন
পুরনো
সুহৃদ
কাজী
সালাউদ্দিনের পক্ষে
আর
কামরুল
আশরাফ
খানের
পক্ষে
সমর্থন
দিয়েছেন নুরুল
ইসলাম
নুরু।
একজন
ফুটবলের লোক
অন্যজন
ফুটবলে
অনুপ্রবেশকারী। কিন্তু
সার
ব্যবসায়ী কামরুলের ফুটবলে
অনুপ্রবেশ কী
করে?
গত
আট
বছর
ফুটবল
তারকা
কাজী
সালাউদ্দিনের আমলে
দৃশ্যমান উন্নতি
হয়নি
বলেই
প্রতিপক্ষ দুঃসাহসী। সত্যি
বললে
আসল
প্রতিপক্ষ মনজুর
কাদের,
হঠাৎ
তিনি
বন্ধু
সালাউদ্দিনকে লাল
পতাকা
দেখিয়ে
বাঁচাও
ফুটবলের ডাক
দিয়েছেন। চট্টগ্রামে শেখ
কামাল
আন্তর্জাতিক ক্লাব
কাপ
টুর্নামেন্টকে ঘিরে
তাঁদের
বন্ধুত্বে ফাটল।
আর
বন্ধু
শত্রু
হলে
যে
কী
হয়,
সেটা
হাড়ে
হাড়ে
টের
পেয়েছেন সালাউদ্দিন। সমালোচনা এমন
উত্তুঙ্গ আর
উলঙ্গ
রূপ
নিয়েছিল সেখানে
আর
ফুটবল
ছিল
না।
ফুটবল
বাঁচানোর নামে
আসলে
একটা
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়।
এই
গোষ্ঠীতে যোগ
দিয়ে
মোহামেডানের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান
হোসেন
ভূঁইয়াও উচ্চকণ্ঠ হয়েছেন
সালাউদ্দিনের ব্যর্থতা নিয়ে।
কি
দিনকাল
পড়েছে,
চালনি
খুঁজছে
সুইয়ের
ছিদ্র!
এতে
সালাউদ্দিনের ব্যর্থতা চাপা
পড়ে
বরং
ধাক্কা
খেয়েছে
ফুটবল
বাঁচানোর স্লোগান। শেষ
ধাক্কাটা খেয়েছে
ফুটবলের বাইরের
এক
ভদ্রলোককে এনে
বাফুফের সভাপতি
পদে
দাঁড়
করিয়ে
দিয়ে।
এই
ভদ্রলোকের নাম
কামরুল
আশরাফ
খান
পোটন।
নরসিংদী-২
আসনের
এই
সংসদ
সদস্য
রাজনীতির ময়দানের খেলোয়াড়। বড়
সার
ব্যবসায়ী হিসেবে
তাঁর
সুনাম
আছে,
অর্থ
আছে।
কিন্তু
ব্যাপক
সংশয়
আছে
তাঁর
ফুটবল-জ্ঞান নিয়ে। যাঁরা
তাঁকে
এই
পদে
ঠেলে
দিয়েছেন, তাঁরা
অবশ্য
এই
প্রার্থীর মধ্যে
বিসিবি
প্রধান
নাজমুল
হাসান
পাপনের
প্রতিভা দেখছেন,
‘পাপন
সাহেব
ক্রিকেটটাকে কোন
জায়গায়
তুলে
নিয়ে
গেছেন।
ফুটবল
পরিচালনা করতে
ফুটবলার হতে
হয়
না।’
হয়তো
তাই।
সফল
সার
ব্যবসায়ী হিসেবে
কামরুল
আশরাফ
ফুটবল
উন্নয়নে সব
সময়
তুলনা
টেনেছেন ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের। ডিএফএ
তো
আছেই,
পাশাপাশি সারের
ডিলাররাই হবে
জেলা
ফুটবলের বড়
অনুঘটক!
আর
ফুটবলের স্পন্সর নতুন
সভাপতি
প্রার্থীর জন্য
নস্যি,
সুতরাং
উন্নয়নে আর
টাকার
সংকট
হচ্ছে
না।
শুধু
শেষ
মুহূর্তে সংকটে
পড়ে
গেছেন
‘সিগন্যালের’।
এটা
এক
অদৃশ্য
বস্তু,
কোথা
থেকে
এসে
আবার
হাওয়া
হয়ে
যায়,
বোঝা
মুশকিল। দুই
দিন
আগেও
সেই
সিগন্যাল-জাত
গুজবে-হুজুগে কামরুল আশরাফ
এগিয়ে
থাকলেও
আজ
আর
তা
নয়।
জেলা
ও
বিভাগীয় ক্রীড়া
সংগঠক
পরিষদের আশীর্বাদ নিয়ে
ঘুরে
দাঁড়িয়েছেন কাজী
0 coment rios: