স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম:
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ৪৩ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৪ কোটি ১৩ লক্ষ (GATS, ২০০৯)
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করেন, যার মধ্যে ২৩% (২ কোটি ১৯ লক্ষ)
ধূমপানের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার করেন এবং ২৭.২% (২ কোটি ৫৯ লক্ষ)
ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন। বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের প্রায় ৭%
(GYTS, ২০১৩) কিশোর-কিশোরী তামাকপণ্য ব্যবহার করে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ (IHME, ২০১৩) মানুষ
অকাল মৃত্যু বরণ করে। তামাকখাত থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পায় তামাক
ব্যবহারের কারণে অসুস্থ রোগীর চিকিৎসায় সরকারকে স্বাস্থ্যখাতে তার দ্বিগুণ
ব্যয় করতে হয়। এভাবে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে
দেশ। সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন’ শীর্ষক
সাউথ এশিয়ান স্পিকার’স সামিট এর সমাপনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল
করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই লক্ষ্য অর্জনে তিনি তামাকের উপর বর্তমান
শুল্ক-কাঠামো সহজ করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি গ্রহণের নির্দেশনা
প্রদান করেছেন যাতে তামাকজাত পণ্যের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং একইসাথে
সরকারের শুল্ক আয় বৃদ্ধি পায়।
আসন্ন
বাজেটে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চহারে
করারোপের দাবিতে তামাকবিরোধী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা
আহছানিয়া মিশন, এসিডি, ইপসা, সীমান্তিক, উবিনীগ, ইসি বাংলাদেশ, ডব্লিউবিবি
ট্রাস্ট, নাটাব, প্রত্যাশা, এইড ফাউন্ডেশন, একলাব, টিসিআরসি এবং প্রজ্ঞা আজ
১২ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ১০:৩০ মিনিটে ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয় (১৯,
জনসন রোড) এর সামনে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করে। মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখে হেলাল আহমেদ, প্রত্যাশা, সৈয়দা অনন্যা রহমান, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, মো: মোখলেছুর রহমান এবং শারমীন রহমান, ঢাকা আহছানিয়া মিশন। মানববন্ধন শেষে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধি দল মাননীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রেরণের জন্য জনাব মোঃ সালাহ উদ্দিন , জেলা প্রশাসক মহোদয়, ঢাকা জেলার নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। এ সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব মজিবর রহমান এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ কাজী এমদাদুল ইসলাম। আগামী বাজেটে তামাকজাত পণ্যে উচ্চহারে করারোপের জন্য স্মারকলিপিতে নিম্নোক্ত দাবিসমূহ তুলে ধরা হয়েছে:
১। অবিলম্বে তামাকের বিদ্যমান শুল্ক-কাঠামোর পরিবর্তে কার্যকর তামাক শুল্কনীতি প্রণয়ন করতে হবে। মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কার্যকর শুল্কারোপের মাধ্যমে প্রতিবছর তামাকপণ্যের দাম বাড়াতে হবে যাতে তামাকপণ্য ক্রমশ: ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়।
২। আগামী বাজেটে (২০১৬-১৭)
ক) সিগারেটের মূল্যস্তরভিত্তিক কর-প্রথা বাতিল করে প্যাকেট প্রতি খুচরা মূল্যের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ পরিমাণ স্পেসিফিক এক্সাইজ ট্যাক্স নির্ধারণ করতে হবে।
খ) বিড়ির ট্যারিফ ভ্যালু তুলে দিয়ে প্যাকেট প্রতি খুচরা মূল্যের ৪০ শতাংশ পরিমাণ স্পেসিফিক এক্সাইজ ট্যাক্স নির্ধারণ করতে হবে।
গ) গুল-জর্দার ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ পরিমাণ স্পেসিফিক এক্সাইজ ট্যাক্স নির্ধারণ করতে হবে।
ঘ) তামাকের ওপর আরোপিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ১ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ২ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে।
0 coment rios: