দুর্বৃত্তদের হামলায় বাসার নিরাপত্তা প্রহরী পারভেজ (২০) আহত হন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কারা কী কারণে ওই দুই ব্যক্তিকে হত্যা করেছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, উগ্র মৌলবাদীরা এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে।
পুলিশ, র্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেছেন। পুরো বাড়িটি ঘিরে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সন্ধ্যার দিকে আহত নিরাপত্তা প্রহরী পারভেজকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন অপর নিরাপত্তা প্রহরী সুমন। পারভেজের বাম চোখের ওপরে কুপিয়ে জখম করা হয়। অল্পের জন্য তার চোখ রক্ষা পেয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
হাসপাতালে সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিকেল ৫টার দিকে ১০/১২ জন লোক এসে বলে, আমরা জুলহাজ সাহেবের বাসায় যাব। আমি তাদের বলি, আপনারা নিচে অপেক্ষা করুন। ওপরে অনুমতি আনতে গেলে তারা পেছন পেছন তিন-চারজন চলে আসে। আমি কলিং বেল চাপতেই জুলহাস সাহেব দরজা খোলেন। তখন আমি ওই তিন-চারজনকে বললাম, আপনারা কেন ওপরে আসলেন? আপনাদের তো নিচে অপেক্ষা করার কথা। কথা বলতেই তারা কোপাতে শুরু করে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্বৃত্তরা কক্ষে ঢুকে ওই দুজনকে কোপাতে থাকে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। এ সময় তারা ফাঁকা গুলি করে পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, হামলাকারীরা ফাঁকা গুলি করতে করতে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ডাকাত, ডাকাত চিৎকার শোনা যায়। ঘরে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে আছে। ওই বাসা থেকে ছয়-সাতজন দৌঁড়ে বেড়িয়ে লেক সার্কাস তেঁতুলতলা মাঠের পাশ দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় রাস্তায় টহল পুলিশের সঙ্গেও তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমকামী ও হিজড়াদের অধিকারবিষয়ক ‘রূপবান’ পত্রিকা সম্পাদনার পাশাপাশি জুলহাজ উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডিতে কাজ করতেন। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির খালাতো ভাই। গত পয়লা বৈশাখে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সমকামীদের নিয়ে মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন জুলহাজ মান্নান।
ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
0 coment rios: