স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম:
দ্য টোব্যাকো এটলাসের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে রোববার দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ভুঁইয়া এ কথা বলেন।
৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। প্রতিবারের মতো এবারো বাংলাদেশ দিবসটি উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন একটি ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ। যার লক্ষ্য হলো তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট রোগ, আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতি সম্পর্কে জনসচেনতার মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানো এবং তাদের রক্ষা করা।
তিনি বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার একদিকে যেমন জনসাধারণের জন্য হুমকি স্বরূপ, অন্যদিকে জাতীয় অর্থনীতি তথা সমৃদ্ধিরও বড় অন্তরায়।
তামাকের ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে দ্য টোব্যাকো এটলাসের রিপোর্টের তথ্য তুলে ধরে সচিব বলেন, দেশে ৪৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করেন। এ হিসাবে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি ১৩ লাখ। যার মধ্যে ২৩ শতাংশ (২ কোটি ১৯ লাখ) ধূমপানের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার করেন এবং ২৭ দশমিক ২ শতাংশ (২ কোটি ৫৯ লাখ) ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন।
তিনি আরো বলেন, ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের প্রবণতা নারীদের মধ্যে বেশি পরিলক্ষিত হয়। দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৬৩ শতাংশ লোক অর্থাৎ ১ কোটি ১৫ লাখ কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। ৪৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষ পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন।
জনসচেতনতা ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে তামাকের ব্যবহার ক্রমশ কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন সচিব। তিনি বলেন, এজন্য সরকার, বেসরকারি সংগঠন, সুশীল সমাজ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সচিব বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে সরকার ২০১৩ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন করে। ২০১৫ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রকাশ করে। আইন ও বিধি বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি, তামাক চাষ নিরুৎসাহিতকরণ নীতিসহ ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, এ সকল নীতি ও কর্মকাণ্ড ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।’
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে তামাকবিরোধী একটি পোস্টারের উদ্বোধন ঘোষণা করেন মনজুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এ বছর বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় নির্বাচন করেছে ‘সাদামাটা মোড়ক-তামাক নিয়ন্ত্রণে আগামী দিন।’
তামাকের ব্যবহার কমাতে প্লেইন প্যাকেজিং বা সাদামাটা মোড়ক অত্যন্ত কার্যকর একটি পদ্ধতি। যাতে সকল তামাক পণ্যের মোড়কের রং একই রকম হয়, কোম্পানির লোগো, রং কিংবা ব্র্যান্ডের ছবি এবং কোনো প্রকার প্রচারণামূলক তথ্য থাকে না।
এতে করে তামাকের প্যাকেট অত্যন্ত অনাকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বিশ্বের অন্যান্য ৭৭টি দেশের মতো বাংলাদেশেও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধি অনুসারে ১৯ মার্চ ২০১৬ তারিখ থেকে সকল তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট ও কৌটার উভয় পাশের্ ৫০ ভাগ জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কবাণী মুদ্রণ কার্যকর হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাসুদেব গাঙ্গুলী, ডব্লিইএইচ এর প্রতিনিধি ও আধুনিকের নির্বাহী পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
0 coment rios: