বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬

মডেল সাবিরার আত্মহত্যায় ক্ষুব্ধ তসলিমা নাসরিন

স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম:

তসলিমা নাসরিনডেস্ক রিপোর্ট : তসলিমা নাসরিন দেশের বাইরে অবস্থান করলেও দেশের অভ্যন্তরের খোঁজ-খবরও রাখেন।স্যোসাল মিডিয়ায় প্রায় প্রতিনিয়তই তার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়। অনেক ঘটনায়ই তার তীব্র প্রতিক্রিয়াও প্রকাশ করেন। মিরপুরের মডেল সাবিরার আত্মহত্যা নিয়েও তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন। আবার মনের খেদও ঝেড়েছেন।

ফেসবুকে দেওয়া আজকের সংশ্লিষ্ট স্ট্যাটাসটিতে তিনি লেখেন-  বলিউডের নায়িকা জিয়া খান আত্মহত্যা করেছিল যে কারণে, সে কারণে বাংলাদেশের মডেল সাবিরা হোসাইনও আত্মহত্যা করেছে। একই কারণে অনেক মেয়েই আত্মহত্যা করে। প্রেমিক অপমান করেছে, বা প্রতারণা করেছে, সুতরাং বেঁচে থাকার, তারা মনে করে না, কোনও প্রয়োজন আছে। সমস্যার সমাধান সাধারণত তারা এভাবেই করে। এমনই তুচ্ছ, তারা বিশ্বাস করে, তাদের নিজের জীবন।

তিনি লেখেন- চলচ্চিত্রে অভিনয় করলে, বা নাটক থিয়েটার করলে, বা মডেলিং করলেই মন-মানসিকতা আধুনিক হয় না। সুচিত্রা, শাবানা, ববিতা, রাজ্জাক, অমিতাভ এবং আরও অনেক তারকাই ধর্মান্ধতা , পুরুষতান্ত্রিকতা, আর কুসংস্কারে ডুবে ছিলেন এবং আছেন। পুরুষের সঙ্গে সংসার না করলে জীবন অর্থহীন হয়ে যায়, বা সন্তান জন্ম না দিলে নারীর জীবনের কোনও মূল্যই থাকে না—এগুলোকে বিশ্বাস করে শিক্ষিত নয়, অশিক্ষিত মানুষ। শোবিজে অশিক্ষিতর সংখ্যা নেহাত কম নয়।

তিনি পতিতাদের উদাহরণ টেনে লেখেন- প্রেমিকের প্রতারণার সবচেয়ে বড় শিকার তারা, যারা পতিতাবৃত্তি করতে বাধ্য হচ্ছে। প্রেমিকপুরুষগুলো তাদের ছলে বলে কৌশলে বিক্রি করে দিয়েছে পতিতালয়ে। চরম দুঃসহবাসেও তারা আত্মহত্যা করে না। বরং যুদ্ধ করে নিজেকে নয়তো নিজের সন্তানকে নরক থেকে বাঁচাবার জন্য। আমি বলতে চাইছি না আত্মহত্যার অধিকার মানুষের নেই। জন্মের পর বেঁচে থাকার যেমন অধিকার আছে, মরে যাওয়ারও অধিকার আছে। তবে অকারণে মরে যাওয়ার কোনও মানে হয় না। যত যাই ঘটুক জীবনে, জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই।

তিনি লেখেন- আমি এমন দেখেছি অনেক, প্রেমে পড়লেই মেয়েরা বড় দুর্বল, বড় ক্ষুদ্র, বড় মূল্যহীন, বড় অকিঞ্চিৎকর, বড় অপ্রতিভ, বড় অবলা, বড় অসহায় হয়ে ওঠে। আত্মসম্মানবোধ লোপ পায়। হয় প্রেমের সংজ্ঞা পাল্টাক, নয়তো মেয়েরা পাল্টাক। ক’দিন পর পরই মেয়েদের আত্মহত্যার খবর শুনতে আর ভাল্লাগছে না।

এভাবেই ফেসবুকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন তসলিমা নাসরিন।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: