স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম:
উপায় তারা একটি বাতলেছেন আর সেটা হলো সমস্যা থেকেই সমাধান বের করা। অনেকটা আমাদের দেশের সৃজনশীল প্রশ্নের মতো। তারা চিন্তা করেছেন যারা এসে মানুষের জায়গা দখল করবে, দখল করবে তাদের কাজ। তাদের থেকেই কেন ট্যাক্স আদায় করবো না! অকাট্য যুক্তি। তাই রোবটদের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায়ের চিন্তা এখন প্রক্রিয়াধীন।
কেননা ইউরোপ-আমেরিকায় আজকাল রোবটের ব্যবহার বেড়েছে আগের তুলনায় বহুগুণ। এবং দিন যত এগোচ্ছে রোবটদের রাজত্বও যেন বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জায়গায় মানুষের পরিবর্তে রোবট ব্যবহার করা হোক, এমন চিন্তা থেকেই কিন্তু রোবটদের কর্মসংস্থান করা হচ্ছিল।
কিন্তু আসলে দেখা যাচ্ছে এখন যেসব কাজ মানুষ খুব সহজেই করতে পারে সেসব জায়গায়ও মানুষ রোবট ব্যবহার করছে। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যেমন রোবট মানুষের বিকল্প হিসেবে কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে। তেমনি ফাস্টফুডের ডেলিভারি ম্যান (পড়ুন ডেলিভারি মেশিন) হিসেবেও তাদের জুড়ি মেলা ভার। তাই বাসাবাড়ির কাজ করে, যাদের আমরা স্থানীয় ভাষায় ছুটা বুয়াও বলে থাকি, এখন দেখা যাচ্ছে তাদের কাজেও ভাগ বসাতে যাচ্ছে রোবট!
এমনটা ঘটতে থাকলে সত্যি সত্যিই একদিন মানুষ জবলেস হয়ে যাবে। কেননা আমাদের মতো দেশ, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মী রপ্তানি করে থাকে। এখন যদি এসব কাজও রোবট করে দেয় অবলীলায় তবে সেখানেও দেখা দেবে অশনি সংকেত।
বোস্টন ডাইনামিকস রোবট তৈরির জন্যে স্বনাম খ্যাত। তারা বেশ কিছু রোবট বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছে। অতি সম্প্রতি তারা নতুন একধরনের রোবটের ভিডিও আপলোড করেছে যার নাম দেয়া হয়েছে ‘স্পট মিনি’। এই স্পট মিনিকে নিয়ে তৈরি ভিডিওতে দেখা যায় যে, এটা কিচেনের কাজও খুব অবলীলায় করে যাচ্ছে। দেখতে অনেকটা উটের মতো স্পট মিনি আগের রোবটদের অনেক সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করেছে। যেমন সে তার মুখ সদৃশ হাত দিয়ে কাঁচের পাত্র খুব সাবধানে কিচেন সিঙ্ক থেকে তুলে কিচেন সেলফে সাজিয়ে রাখতে পারে। কিংবা খালি ক্যান তুলে ফেলতে পারে ময়লা ফেলার বক্সে। অথবা টেবিলের নিচে নিজে ঝুঁকে চলে যেতে পারে খুব সহজেই। আবার তার চলার পথে যদি কোথাও ঝুঁকে যেতে হয় সেখানেও সে ঝুঁকতে পারে রিয়েল টাইমেই।
আবার অন্য দিকে সে কিন্তু কলার খোসায় পা পিছলেও যায়! কিংবা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে পারে তড়তড় করে। ফলে এ ধরনের রোবট দিয়ে ঘরের টুকিটাকি কাজ করিয়ে নেয়া যাবে সাধারণভাবেই।
যদিও ভিডিওর শেষ দিকে একটি খুনসুটি বা ক্রটিও তুলেও ধরা হয়েছে। যেখানে স্পট মিনি তার মনিবকে একটি ক্যান দিতে গিয়ে তার মনিবকে ভয় পাইয়ে দেয়। আসলে এখানেই নিহিত রয়েছে এসব আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের দুর্বলতা। তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে একেবারে মানুষের বিকল্প হতে পারে না। যেখানে তাদের নিজস্ব কিছু জ্ঞান খাটানো দরকার সেখানে অনেক সময় তারা হযবরল করে ফেলে। যেটা এই ভিডিওর শেষ ভাগে আছে।
তবে স্পট মিনি এখনো নানা প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই যাবে। ফলে হয়তো এসব দিক নিয়েও কাজ করা হচ্ছে। এমনকি কোনো একদিন এই দুর্বল দিকগুলোকেও শুধরে দেয়া হবে। ফলে শুধু শিক্ষিত লোকদের জন্যেই নয়, রোবট হুমকি স্বরূপ আবির্ভূত হবে অর্ধশিক্ষিত এমনকি অশিক্ষিত লোকের জন্যেও। কেননা তারা যে বুয়ার কাজেও অরুচি দেখাচ্ছে না!
0 coment rios: