প্রতিবছরের মতো এবারও ৫ জুন পালিত হয়েগেলো।
আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ব পরিবেশদিবস। ইতিহাসের
তথ্যানুযায়ী, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১৯৭২ সালে
‘ইউনাইটেড ন্যাশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি)’ গঠন
করা হয়। তারইপ্রস্তাবমতে ১৯৭৪ সাল থেকে ৫ জুন বিশ্ব
পরিবেশ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।সময়ের হিসাবে
এবারে পালিত হয়েগেলো বিশ্ব পরিবেশ দিবসের ৪২তম বার্ষিকী। যেকোনো
একটি বিশেষ দিবসকে একটি বিশেষ দিনে পালন করলেই দায়-দায়িত্ব শেষ হয়েযায় না। তারপরও এভাবে যদি সারা বিশ্বের মানুষ গুরুত্বসহকারে একটি
দিবসএকদিনে পালন করে তবে তার গুরুত্বই
আলাদা
আমরা যদি পৃথিবীর অন্যতম জীববৈচিত্র্যের
বেলাভূমি, অনলাইন ভোটিংয়ে নতুনসপ্তাশ্চর্যের
একটি এবং বিশ্বের সবচেয়ে ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে পরিচিত আমাদেরবাংলাদেশের সুন্দরবনের কথা ধরি, তাহলে বিষয়টি
আরও পরিষ্কার করা যাবে।সুন্দরবনের
প্রধানতম ঐতিহ্য হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, চিতাবাঘ,
বিভিন্ন ধরনের পাখি, সাপ, গুইসাপ, ব্যাঙ,
কচ্ছপ, সুন্দরী, গেওয়া, কেওড়াগাছ, মৌচাক, বিভিন্ন দেশি প্রজাতির সুস্বাদু মাছ
ইত্যাদি। তার মধ্যে সবইআস্তে আস্তে কমে
যাচ্ছে। অনেক বন্যপ্রাণী কালের আবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।অনেকগুলো
বিলুপ্তির পথে রয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি কমছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারও হরিণ। একসময় হাজার হাজার বাঘ ছিল, যা এখন মাত্র
২০০-৩০০-তে এসে ঠেকেছে।শিকারিরা
অনায়াসে বনে ঢুকে শিকার করছে এবং পাচার করছে এসব অমূল্য সম্পদহিসেবে পরিচিত বন্যপ্রাণ,ী এর চামড়া, হাড়, মাংসসহ
আরও বিভিন্নঅঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ইত্যাদি। কিছু কিছু
প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে যেগুলো একবার হারালে আর কখনোফিরে
পাওয়া সম্ভব নয়। বন্যপ্রাণী এগুলোর মধ্যে অন্যতম। কাজেই ধরিত্রীরজীববৈচিত্র্য রক্ষায় বন্যপ্রাণীকে অনৈতিক ও অবৈধ শিকারের হাত থেকে
রক্ষাকরতে হবে। প্রয়োজনে জাতীয় ও
আন্তর্জাতিকভাবে সেগুলো বন্ধে রুখে দাঁড়াতেহবে।
আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ হলো এঙ্গোলা। সেটি মূলত এক সময় বনজঙ্গলেআবৃত ছিল। সেই সঙ্গে ছিল প্রচুর বন্যপ্রাণীও। কিন্তু কালের সংকটে পড়ে
এখনসেসব বনভূমি ও বন্যপ্রাণী উভয়ই হুমকির মুখে।
সে জন্য ২০১৬ সালের বিশ্বপরিবেশ দিবসের
হোস্ট কান্ট্রি হিসেবে এঙ্গোলাকে নির্বাচন করা হয়েছে। কাজেই একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, ২০১৬ সালের প্রতিপাদ্য এবং থিম ও হোস্ট
কান্ট্রিনির্বাচন একেবারেই সময়োপযোগী হয়েছে।
এখন আসা যাক, পরিবেশের সর্বজনীন কিছুবিষয়
আলোচনার জন্য। আগেই বলেছি, একসময় পরিবেশ বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের
সঙ্গেদেখা হতো না। নব্বইয়ের দশকের আগে
পরিবেশ বিষয়টি কখনো কারও বিবেচনাতেই আনাযায়নি।
তারপর যখন দেখা গেল যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিবেশবিষয়ক বিভিন্নসমস্যা হতে লাগল, তখন ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে
‘আর্থ সামিট’ নামে একটি সম্মেলন হয়। সেখানেই
সর্বপ্রথম প্রতিকূল পরিবেশের বিভিন্ন বিষয়সচিত্র
আকারে তুলে ধারার কারণে বিশ্বের নীতিনির্ধারকদের টনক কিছুটা নড়তেশুরু করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ বিষয়টি যে অগুরুত্বপূর্ণ কিংবা
ফেলনাকোনো বিষয় নয় তা অনুধাবন করতে থাকে
সবাই। সেটি অনুধাবনের অংশ হিসেবে ১৯৯৫সাল থেকে
জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনায় শুরু হয় । পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়সহ
সরকারি ও বেসরকারি অনেক পরিবেশকর্মী, সংস্থা ওবিশেষজ্ঞরা
আগে থেকেই দিবসটির তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে অনেক কর্মসূচিগ্রহণ করে থাকে। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমও এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে
প্রচার করেথাকে। এবারও তার কোনো ব্যতিক্রম হচ্ছে
না। “স্বদেশ মৃত্তিকা” বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সাফল্যকামনা
করি। আর প্রতিজ্ঞা করি যেন, একটি গাছ কেটে সেখানে দশটি গাছ লাগিয়েবিশ্বকে সবুজ-শ্যামল করে তুলি। বন্ধ করি নির্বিচারে বন্যপ্রাণী নিধন।সেখানেই নিরাপদে থাকবে আমাদের বন্যপ্রাণীরা। আর তারা ভালো থাকলেই
ভালো থাকবআমরা সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। আসলে
মানুষের জন্যই তো সব।
Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.
0 coment rios: