প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, প্রত্যেকের নির্বাচনী এলাকায় যেসব উন্নয়নকাজ বাকি রয়েছে তা শেষ করতে হবে। সরকার যে উন্নয়নমূলক কাজ করছে সেটি বারবার মানুষের কাছে তুলে ধরবে হবে। আগে কী ছিল আর আওয়ামী লীগ সরকার কী উন্নয়ন করছে তা মানুষকে জানাতে হবে।
দলীয় সাংসদদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের প্রধান আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হলে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হবে। শান্তি নিশ্চিত করতে হবে। এলাকায় যেসব সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে সেগুলোকে সক্রিয় রাখতে হবে। যারা এখনো কমিটি গঠন করেননি দ্রুত গঠন করবেন। সব শ্রেণি পেশার মানুষকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।
সূত্র জানায় বৈঠকে সাবেক চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ, বি এইচ হারুন, শামীম ওসমান, আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, হাছান মাহমুদসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য বক্তব্য রাখেন।
সূত্র জানায়, একজন নারী সাংসদ বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ২০২০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসনে নির্বাচিত নারী সাংসদ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এটা নিশ্চিত করার দাবি করেন। একই সঙ্গে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারীদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করেন।
সূত্র জানায়, দুজন সাংসদ অভিযোগ করেন মন্ত্রীদের আচরণ ভালো না। তারা সাংসদদের মূল্যায়ন করেন না। মন্ত্রীরা যাতে সাংসদদের ওপর ক্ষমতা ও শক্তি প্রয়োগ না করেন সেই দাবি জানান। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনো মন্তব্য করেননি বলে সূত্র জানায়। আরেকজন সাংসদ বলেন যে, সব পুলিশ সদস্য জঙ্গিবাদ রুখতে গিয়ে প্রাণ দিচ্ছেন তাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়ার দাবি করেন এবং কোনো স্থাপনা তাদের নামে নামকরণের পরামর্শ দেন। আরেকজন সাংসদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস ইসরায়েলে হামলা করে না। এ থেকেই বোঝা যায় এটা কাদের সৃষ্টি।
সূত্র জানায়, সাবেক চিফ হুইপ আবদুস শহিদ পুলিশ দিয়ে জঙ্গি দমনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটা কতটা ফলপ্রসূ হবে এই সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পুলিশের সবাই আমাদের লোক নন। পুলিশে বিএনপি-জামায়াতের লোক রয়েছে। এই কথায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তারা জীবন দিয়ে জঙ্গি কার্যক্রম রোখার চেষ্টা করছে। তাই ব্যক্তিগত কেনো পছন্দ-অপছন্দের কারণে এভাবে বলা ঠিক নয়। আমাদের মধ্যেই তো কত ধরনের লোক রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী কল্যাণপুরে সফল জঙ্গি অভিযানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, পুলিশ ও সোয়াত বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমি রাতে অভিযান চালাতে না করেছি। ভোরে যাতে অপারেশন চালানো হয় সেই নির্দেশনা দিয়েছি। কারণ রাতে করলে ক্ষয়-ক্ষতির বিষয় থাকে। নানা প্রশ্ন ওঠে।
দলীয় সাংসদদের এলাকায় গিয়ে সঠিক ইসলাম প্রচার করে জঙ্গিবাদ দমন ও জনসাধারণকে সচেতন করার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নিজ নিজ এলাকায় যান এবং প্রকৃত ইসলাম তুলে ধরুন। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। সারা বিশ্বজুড়েই এখন তা ঘটছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশ তা দমন করতে না পারলেও আমরা পারব। কারণ আমাদের দলীয় লোকজন আছে। আছে শক্তিশালী সংগঠন।
প্রধানমন্ত্রী ইসলামি ফাউন্ডেশনের জঙ্গিবাদ বিরোধী নির্দেশনা ও এক লাখ আলেমের ফতোয়া অনুযায়ী জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণা চালানোর জন্য নির্দেশ দেন। তিনি তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, আপনারা কোনো ধরনের চিন্তা করবেন না। আমরা এর আগেও অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান করেছি। এখনো করব। জঙ্গিবাদ কোনো সংকট না। আমরা এর মোকাবিলা করব।
তারেক রহমানের সাজা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে আমাদের করার কিছু ছিল না। এটাই প্রথম মামলা যেখানে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। তারেক রহমানকে নিয়ে নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছিল তা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। তার টাকা পাচার প্রমাণিত।
0 coment rios: