বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬

সুন্দরবনের ৮৬ বর্গমাইল সুন্দরী ও ৫৬ বর্গমাইল গেওয়া বৃক্ষ হ্রাস

স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম:


সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট এলাকা

সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট এলাকা

 সুন্দরবনের মোট সীমানার ৮৬ বর্গমাইল সুন্দরী গাছ ও ৫৬ বর্গমাইল গেওয়া গাছ কমে গেছে। একই সঙ্গে অনেক বৃক্ষরাজি এবং জলাশয়ও হারিয়ে গেছে সুন্দরবন থেকে। জলবায়ু পরিবর্তন ও জনসংখ্যার অত্যধিক চাপের কারণে বনের জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।

গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছরই সুন্দরবনের গাছের সংখ্যা কমে আসছে। ষাটের দশকে প্রতি হেক্টরে ৩০০টি গাছ থাকলেও গেল বছর তার সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসে। ১৯৮০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১০০ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল হারিয়ে গেছে।

সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘বনের উত্তর দিকে পানি কমে যাওয়ার কারণে লবণাক্ততা বেড়ে যায়। প্রবল ¯্রােতের মুখে মাটি সরে যাচ্ছে। ঘোলাটে পানি না এসে সাধারণ পানি আসায় পলি সুন্দরবনের চারপাশে জমা হচ্ছে। এতে বছর বছর গাছের সংখ্যা কমে আসছে। ২০২০ সাল নাগাদ সুন্দরবনে হেক্টর প্রতি গাছের সংখ্যা নেমে আসবে ১০০টির কাছাকাছি।

তিনি বলেন, ‘একইভাবে সুন্দরী গাছের সংখ্যা এবং  উচ্চতাও কমে যাচ্ছে। আগে যেখানে সুন্দরী গাছের উচ্চতা ছিল ৪০ থেকে ৫০ ফুট, এখন তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১৫ থেকে ২০ ফুটে। জলবায়ূ পরিবর্তনের প্রভাবে সাগরে পানির উচ্চতা বাড়ছে। ফলে সমতল সুন্দরবনের অনেক গভীরে চলে যাচ্ছে লবণপানি। উল্টো দিকের নদ-নদী দিয়ে সমুদ্র অভিমুখে যাওয়া মিষ্টি পানির পরিমাণও কমছে।’

অপর এক সূত্র জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, লবনাক্ততা বৃদ্ধি ও নদী ভাঙনের কারণে গোলপাতা জন্মানোর পরিমাণও কমে গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের নির্বিচারে চলাচলের কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ম্যানগ্রোভের শ্বাসমূল ভেঙ্গে গিয়ে গাছ মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে, চলতি বছর চারবার এবং গত ১৪ বছরে ২২ বার আগুনে পুড়েছে ঐতিহ্যের এই সুন্দরবন। এতে ভস্মিভূত হয় কোটি কোটি টাকার বৃক্ষরাজি ও লতা-পাতা। অগ্নিকান্ডে প্রায় সাড়ে ১০ একর বনজ সম্পদ পুড়ে গেছে। আগুন লাগায় সুন্দরবনের জীববৈচিত্রসহ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে বাঘ, হরিণ, বানর, ভোদর ও শূকরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা থেকে দূরে সরে গিয়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: