স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম:
পিতার সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণে তিনি সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর খামার বাড়ির কৃষিবিদ মিলনায়তনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগ এই স্মরণ সভার আয়োজন করে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে এই দেশ ২১ বছর শোষিত নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছে। আমি সব হারিয়েছি। কিন্তু সব হারাবার বেদনা নিয়েও একটা শক্তি নিয়ে কাজ করি, বড় সন্তান হিসেবে। এই দেশকে নিয়ে, দেশের মানুষগুলোকে নিয়ে আমার বাবার যে স্বপ্নগুলো ছিল, এই কাজগুলো করলে, দেশের মানুষগুলো ভালো থাকলে, আমার আব্বার আত্মা শান্তি পাবে।’
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পরের ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে যান তিনি। নিজেকে সামলে নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধুমাত্র একটা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে, আর কোনো আকাঙ্ক্ষা আমার নেই, একটাই আকাঙ্ক্ষা- যে মানুষগুলোর জন্য তিনি (বঙ্গবন্ধু) জীবন দিয়ে গেলেন। আমার মা জীবন দিলেন। আমার ভাইয়েরা জীবন দিল। সেই মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন করা।’
ধীরে ধীরে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যদিয়ে চলতে হচ্ছে। অনেক আঘাত আসছে। আরো হয়ত আসবে। কখনো সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, খুন গ্রেনেড হামলাসহ অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়েছে। শুধু একটা সাহস নিয়ে চলি। যে সাহসটা আমার বাবা-মার কাছ থেকে পেয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করছি। জনগণের জন্য কাজ করছি। তাদের কল্যাণে কাজ করছি। এখানে কোনো ব্যক্তিস্বার্থ নেই।’
তিনি বলেন, ‘দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তার (বঙ্গবন্ধুর) স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ব। তবেই তার আত্মা শান্তি পাবে। খুনিদের বিচার করেছি। বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। একটাই কাজ দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলা।
‘আজকের দিনে সেই প্রতিজ্ঞাই নিচ্ছি। পিতাকে সেই কথাই দিচ্ছি। তার এই দুঃখী মানুষের মুখে আমরা হাসি ফোটাবই। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে সেই কাজটিই করি।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ১৫ আগস্টে জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালন না করার ঘোষণার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কালকে দেখলাম উনি জন্মদিন পালন করবেন না। তার জন্মদিন এই তারিখে না শুধু আমাদের আঘাত দেওয়ার জন্য এই দিনে পালন করেন।
‘এটাকে (জন্মদিন উৎযাপন না করা) কেউ কেউ আবার রাজনৈতিকভাবে তার উদারতা দেখাতে চাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনাটা কী সেটা তো আমি জানি। ১২ আগস্ট তার ছেলে কোকোর জন্মদিন। কাজেই কোকোর জন্মদিন যেহেতু করতে পারবেন না, কোকো মারা গেছে। তাই নিজেরটা করবেন না। এটা হলো বাস্তব কথা।’
তিনি আরো বলেন, ‘আর এটা তো তার (খালেদা জিয়ার) জন্মদিন না। পাসপোর্টে তার অন্য তারিখ রয়েছে। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জীবনবৃত্তান্তে অন্য তারিখ রয়েছে। শুধু বঙ্গবন্ধুকে হেয় করার জন্য, আর আমাদের আঘাত দেয়ার জন্য এই দিনটাকে বেছে নিয়েছিল ফুর্তি করার। ১৫ আগস্ট এই দিনটাতে উৎসব করে জানিয়ে দেন খুনিদেরকে- যে তিনি তাদের সাথে আছেন।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।
সভা যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।
0 coment rios: