সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য দল-মত-নির্বিশেষে সবার প্রতি আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। উদ্দেশ্য ছিলো ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডি, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্প ধারা, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য, সিপিবি ও বাসদসহ সরকারের বাইরে থাকা দলগুলোকে নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়া। এজন্য দুই জোটের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি। এর অংশ হিসেবে গত ৪ আগস্ট কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য নিয়ে আলোচনা করেন খালেদা জিয়া। ওই বৈঠকে বেশ কিছু শর্তের সঙ্গে আগে জামায়াত ছাড়ার প্রস্তাব দেন দলটির প্রধান কাদের সিদ্দিকী। যদিও পরে কাদের সিদ্দিকী গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, জাতীয় ঐক্য গড়তে তিনি সেখানে যাননি।
বিএনপির জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে বাসদের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনও ওই জাতীয় ঐক্য নিয়ে আলোচনার জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসেনি। আর অন্য দলের জোটে যাওয়ার ইচ্ছাও বাসদের নেই। বিএনপি তার জায়গা থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কর্মসূচি দিতে পারে।
এদিকে বিএনপি তার সদ্য ঘোষিত কমিটি নিয়েও টালমাটাল অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দলটি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতেও হিমশিম খাচ্ছে। দলের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান প্রত্যাশিত পদ না পেয়ে এরই মধ্যে ব্যাকফুটে চলে গেছেন। কমিটি নিয়ে ক্ষুদ্ধ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও। এই ক্ষোভ সামাল দিয়ে ফের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু করা বিএনপির জন্য কঠিনই হবে বলে মনে করছেন দলটির অনেকেই। আর শুরু করলেও সেটা কতটা ফলপ্রসু হবে- তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সদ্য ঘোষিত কমিটির একজন উপদেষ্টার ভাষ্যমতে, ‘কমিটি নিয়ে দলের যে পরিস্থিতি তাতে বিভিন্ন পর্যায়ের ক্ষোভ নেভানোই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এরই মধ্যে জাতীয় ঐক্য নিয়ে আপাতত এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। কারণ, কমিটি নিয়ে ভবিষ্যতে আরো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
0 coment rios: