সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৬

‘বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে লড়তে চায় যুক্তরাষ্ট্র’

স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম


‘বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে লড়তে চায় যুক্তরাষ্ট্র’ ঢাকা সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে হওয়া ওই সাক্ষাতে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়। 
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন। ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, সাক্ষাৎকালে জন কেরি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমাদের অনেক বিশেষজ্ঞ আছে। আমরা সহযোগিতা করতে চাই। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র এক সঙ্গে লড়াই করবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
John_Kerry_Shiekh_Hasinaপাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান এবং বাংলাদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করারও আগ্রহ প্রকাশ করেন কেরি। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জন কেরির আহ্বানকে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস বৈশ্বিক সমস্যা। আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করছি। জনগণ আমাদের সহযোগিতা করছে। ধর্মীয় নেতারা জনমত গঠনে কাজ করছেন।

এ সময় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন গৃহীত পদক্ষেপের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তথ্য আদান-প্রদানে গুরুত্ব আরোপ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিতে অনেক উন্নত। সেজন্য আপনাদের কাছে অনেক তথ্য আসে। আমাদের সে তথ্য দিলে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের ধরতে সুবিধে হবে।

সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের উৎস কোথায়? প্রধানমন্ত্রীর এমন প্রশ্নের জবাবে জন কেরি বলেন, তাদের দখলে থাকা তেলক্ষেত্র থেকে তেল বিক্রি করে এবং ব্যাপক চাঁদাবাজি করে তারা অস্ত্র সংগ্রহ করে।

বৈঠকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে মর্মান্তিকভাবে নিহত হওয়ার ঘটনা স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন। এ ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনার কষ্ট বুঝি। এ বিষয়টি পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার সকালে ঢাকায় এসে বাংলাদেশ সফরের কার্যসূচি শুরু করেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন পরিদর্শন ও জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে।

John_Kerry_Sheikh_Hasina_01

ব্রিফিংয়ে ইহসানুল করিম আরো জানান, সন্ত্রাসবাদ ছাড়াও উভয় দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে জন কেরি। এ ব্যাপারে কেরি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য, জ্বালানিসহ অন্য অনেক ক্ষেত্রেই আমরা যৌথভাবে কাজ করতে পারি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ আহ্বান করেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অস্ত্র ছাড়া সব বাংলাদেশি পণ্যের ডিউটি ও কোটা ফ্রি প্রবেশের সুযোগ চান। দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এখন চমৎকার সর্ম্পক বিদ্যমান।

বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে কেরি বলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দুর্দান্ত কাজ করছে। আর্থ-সামাজিক বিষয়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা বাংলাদেশের অংশীদার হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী ও জন কেরির সাক্ষাতের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: