বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

৬ দিনের রিমান্ডে ওবায়দুল

স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম

৬ দিনের রিমান্ডে ওবায়দুল কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ওবায়দুলের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেন ওবায়দুলের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওবায়দুলকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক আলী হোসেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি ওবায়দুল প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিভিন্ন সময় রিশাকে উত্ত্যক্ত করত। গত ২৪ আগস্ট বেলা সোয়া ১২টার দিকে রিশা তার সহপাঠী মুহতারিফ রহমান রাফির সঙ্গে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে যাওয়ার পথে ওবায়দুল রিশাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাম হাতে ও পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ২৮ আগস্ট রিশা ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ঘটনার পর থেকে ওবায়দুল পলাতক ছিলেন। তাকে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ৩১ আগস্ট নীলফামারীর ডোমরা থানার সোনারগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছুরিকাঘাতের কথা স্বীকার করলেও এখনো হত্যার আলামত ছুরি উদ্ধার হয়নি। ওই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, হত্যার কারণ, রিশাকে যে ছুটি দিয়ে আঘাত করা হয় সে ছুরি উদ্ধার, এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত কিনা এবং মদদদাতা কেউ আছে কি না তা উদঘাটনের লক্ষ্যে এই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

রিমান্ড শুনানিকালে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আর বাদীপক্ষে রিমান্ড শুনানিতে আবু আব্দুল্লাহ বলেন, হত্যাকাণ্ডটি হৃদয়বিদারক। আসামি রিশাকে শুধু উত্ত্যক্ত করে ক্ষান্ত হয়নি, তাকে হত্যা করেছে। তাই এই আসামির ১০ দিনের রিমান্ডই মঞ্জুর করা হোক। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি এবং রাজধানী মানবাধিকার কমিশনও ওবায়দুলের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করে।

রিমান্ড শুনানিকালে আদালতে হাজির ছিলেন রিশার মা তানিয়া হোসেন এবং বাবা রমজান হোসেন। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। আদালত থেকে বের হয়ে তারা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আমাদের মেয়ে রিশাকে হত্যার বিচার চাই, ওর (ওবায়দুল) ফাঁসি চাই। ওর বিচার যেন তাড়াতাড়ি শেষ হয়, সেই আশা করছি।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভারব্রিজে রক্তাক্ত অবস্থায় রিশাকে পাওয়া যায়। স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ২৮ আগস্ট সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিশার মৃত্যু হয়।

ঘটনার দিনই রিশার মা বাদী হয়ে রমনা থানায় এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দর্জির দোকানের কর্মী ওবায়দুলকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় এবং দণ্ডবিধির ৩২৪/৩২৬/৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টা ও গুরুতর আঘাতের অভিযোগে একটি মামলা করেন। রিশা মারা যাওয়ার আগে মামলা করায় মামলায় ৩০২ ধারা ছিল না। পরে রিমান্ড আবেদনে ৩০২ ধারা সংযোজন করা হয়েছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন।

গতকাল বুধবার সকালে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় বাজার থেকে ওবায়দুলকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মিরাটঙ্গী।

রিশার বাবার নাম রমজান আলী। তিনি ক্যাবল ব্যবসায়ী। পুরান ঢাকায় সিদ্দিক বাজারে ১০৪ নম্বর বাড়িতে থাকেন তারা।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: