মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬

সদকায়ে জারিয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত



 স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম


সদকায়ে জারিয়া আরবি শব্দ। সদকা শব্দের অর্থ দান করা এবং জারিয়া অর্থ প্রবহমান, সদাস্থায়ী প্রভৃতি। সদকায়ে জারিয়া হলো এমন দান যার কার্যকারিতা কখনো শেষ হবে না এবং তা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। অর্থাৎ এই পৃথিবী যত দিন থাকবে তত দিন পর্যন্ত কবরে শুয়ে শুয়ে সদকাকারী ব্যক্তি এর সওয়াব পেতেই থাকবে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিত্তশালী লোকদের ওপর সম্পদের জাকাত এবং ওশর ফরজ করেছেন। সেই সাথে সদকার ব্যাপারেও তাকিদ দিয়েছেন। ইসলাম জাকাত এবং ওশরের পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছে কিন্তু সদকার ব্যাপারে কোনো সীমা বেঁধে দেয়নি। এ জন্য যে, এর মাধ্যমে মুসলিম সমাজে মজবুত অর্থনীতি গড়ে উঠতে পারে। অপর দিকে সদকার ব্যাপারে ধনী-দরিদ্রের কোনো শর্ত নেই। সবাই সদকা করতে পারেন। তাই সদকা করা বিশেষত সদকায়ে জারিয়ার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখা প্রত্যেক মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। এর ফলে পরকালীন জীবন অত্যন্ত শান্তিময় হয়ে উঠবে এমনটি আশা করা যায়। সদকায়ে জারিয়া সম্পর্কে হাদিস শরিফে সবিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হজরত আবু হোরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত প্রিয় নবী সাঃ এরশাদ করেছেন, মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে তখন তার আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তিনটি আমল জারি থাকে
(
১) সদকায়ে জারিয়াহ
(
২) উপকারী জ্ঞান এবং
(
৩) নেক্কার সন্তান যে দোয়া করবে। (বোখারি ও মুসলিম শরিফ)
 আল্লাহ আমাদের স্রষ্টা আমরা তাঁর সৃষ্টি তথা গোলাম। আমাদের কল্যাণার্থেই তিনি পৃথিবীকে সুন্দর সাজে সজ্জিত করেছেন। প্রতিটি বিধিবিধান প্রণয়ন করেছেন। যখন সময় চলে আসবে তখন এক এক করে সবাই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে অন্ধকার কবরে চলে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজা-বাদশাহ, আমির-উমরাহ, ধনী-গরিব কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
দুনিয়াতে বিভিন্ন পেশায় নির্দিষ্ট মেয়াদে নিয়োজিত চাকরিজীবী ব্যক্তি যখন অবসর গ্রহণ করে তখন তার পরবর্তী দুনিয়াবি জীবন সুন্দরভাবে কাজে লাগানোর জন্য কোম্পানি বা সরকার পেনশন এবং গ্র্যাচুইটির ব্যবস্থা রাখে। এতে করে সে বৃদ্ধ বয়সেও ভালোভাবে দিনাতিপাত করতে পারে। এটা ব্যবস্থাপনার বিশেষ অনুগ্রহ। অথচ আল্লাহতায়ালা এর চেয়ে কোটি কোটি গুণ বেশি দয়ালু তাঁর বান্দাদের প্রতি, যা অনেকেই উপলব্ধি করতে সক্ষম নই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে, ওঠা-বসা, চলাফেরা, লেনদেন, বিভিন্ন কাজে-কর্মে অনেক ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে। এর থেকে তওবা না করে মারা গেলে নেকির পাল্লা হালকা হয়ে বান্দা বিপদে পড়তে পারে। তাইতো আল্লাহ বান্দার দুরবস্থা দূর করার জন্য মৃত্যুর পরও নেকি অর্জনের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। হাদিসে বর্ণিত, তিনটি কাজের যেকোনো একটি করে গেলে বান্দা কবরে বসে বসে নেকি পেতেই থাকবে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: