স্বদেশসময় টোয়েন্টিফোর ডটকম
২৮৬ রান, চতুর্থ ইনিংসে এটা বড় টার্গেট, বিশেষ করে জহুর আহমেদ চৌধুরীর স্পিন ট্রাকে। বাংলাদেশ কি পারবে? শুরু থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত এই প্রশ্ন রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছে বারবার। কখনো মনে হয়েছে না, হবে না। কখনো মনে হয়েছে হ্যাঁ, হবে। তবে চূড়ান্ত ফয়সালার জন্য অপেক্ষা করতে হবে সোমবার সকাল পর্যন্ত।
২০০০ সালে অভিষেকের পর (চট্টগ্রাম টেস্টের আগে পর্যন্ত) সাকুল্যে সাত টেস্টে জিতেছে বাংলাদেশ। তবে একটিও বড় দলের বিপক্ষে নয়। ৫টি জিম্বাবুয়ে ও ২টি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, র্যাংকিংয়ে যারা একেবারেই নিচের সারির দল।
বড় দলকে হারানোর সুযোগ অবশ্য বেশ কয়েকবারই পেয়েছিল টাইগারার। কিন্তু প্রতিবারই হেরে যেতে হয়েছে শেষ পর্যন্ত।
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ২৯৩ রানের জবাবে বাংলাদশ করেছিল ২৪৮। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ২৪০ রানে অলআউট হলে বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৮৬। কোনো কিছুই পক্ষে ছিল না।
টেস্টে শেষ ইনিংসে ২৮৬ রান অনেক বড় টার্গেট, বিশেষ করে চট্টগ্রামের স্পিন স্বর্গে। অতীত অভিজ্ঞতাও ভালো নয়। ২১৫ রানের বেশি তাড়া করে কখনো জেতেনি বাংলাদেশ।
এই মনস্তাত্ত্বিক চাপ পুরো দলের উপরই ছিল। তবে তামিম ইকবালের ওপর একটু বেশিই হবে। উইকেটে এসে নিজেকে গুটিয়ে ফেললেন, যেটা তামিমের চরিত্রের সঙ্গে যায় না। যতবার তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন, ততবারই তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এদিন ফিরলেন ৯ রান করে।
ইমরুল কায়েসকে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল। মনে হয়েছিল কঠিন সময়ে অনেক দূর যাবেন। খুব সহজভাবে খেলছিলেন ইংলিশ বোলারদের। ৪৩ রান করার পর আউট হয়ে গেলেন একটা বাজে শট খেলে।
টেস্ট দলের সেরা ব্যাটসম্যান মমিনুল। তার ব্যাটিং গড় ৫০ এর উপরে। তিনি মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকতে পারেন। যেটা দরকার ছিল এদিন। ভালো করার আভাস দিয়েও এলবি হয়ে ফিরেন ২৭ রানে। এরপর লড়াকু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৭ রান করে আউট হয়ে গেলে নিদারুণ চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা।
এরপর মুশফিক- সাকিব ক্রিজে। বড় পার্টনারশিপ যদি দাঁড়িয়ে যায়। আশাও ছিল এ জন্য। কিন্তু সে আশাতে গুড়েবালি। উইকেটে ভালোমতো সেট হলেন, ছক্কা হাঁকালেন, কিন্তু সাকিব আবারও ফিরে গেলেন হতাশ করে, ২৪ রানে।
৫ উইকেটে ১৪০। বাগে পেয়ে এবারও বুঝি বড় দলকে হারানো যাচ্ছে না। কঠিন এ অবস্থা থেকে আবার স্বপ্ন দেখালেন অধিনায়ক মুশফিক ও সাব্বির রহমান। আস্তে আস্তে ম্যাচ নিয়ে আসেন নিজেদের অনুকূলে। কিন্তু দুঃসংবাদ। গ্যারেথ ব্যাটির অসাধারণ এক বলে ক্যাচ নিয়ে ফিরতে হয় তাকে। ৩৯ রানে আউট হবার আগে সাব্বিরের সঙ্গে গড়েন ৮৭ রানের মহামূল্যবান জুটি।
এরপর দুই ডেব্যুট্যান্ট সাব্বির ও মিরাজের দিকে তাকিয়ে দল। কিন্তু প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ মিরাজ। পরিস্থিতির চাপ নিতে না পেরে ১ রানেই ফিরেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্নটাও ফিকে হয়ে যায়। পড়ে গেছে আট উইকেট। তখনো রান বাকি ৪৮। তাইজুলররা আর কী করতে পারবেন?
তবে তাইজুলকে নিয়ে আবার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন উইকেটে থাকা সাব্বির। কারণ দারুণ বীরত্ব দেখিয়ে তাইজুল আছেন ১১ রানে অপরাজিত।
ইংল্যান্ডের পক্ষে গ্যারেথ ব্যাটি ৩টি, মঈন আলী ও ব্রড ২টি করে উইকেট নেন।
এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪০ রানে অল আউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। ৮ উইকেটে ২২৮ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল তারা। রবিবার চতুর্থ দিনের সকালে মাত্র ২০ মিনিট উইকেটে টিকে থাকতে পারেন ইংল্যান্ডের শেষ দুই ব্যাটসম্যান। আগের দিন অপরাজিত থাকা ব্রড সেই ১০ রানেই রান আউট হন। গ্যারেথ ব্যাটিকে ৩ রানে ফেরান তাইজুল। আগের দিন ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়েকস। এদিন ইংল্যান্ড ব্যাট করল ৪.২ ওভার। সাকিব ৫টি ও তাইজুল ২ উইকেট নেন।
0 coment rios: