২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিক: সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিবেশ সত্ত্বেও শক্তিশালী ইবিআইটিডিএ মার্জিন নিয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি
২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে ৩,৭৩৪.৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে গ্রামীণফোন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৮ শতাংশ বেশি। প্রথম তিন মাসে ১০ লাখ নতুন গ্রাহক গ্রামীণফোনের সাথে যুক্ত হয়েছেন, ফলে বছরের প্রথম প্রান্তিকের শেষে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ১০ লাখ। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৫৪.৩ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছেন, যা গত প্রান্তিকের চেয়ে ০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘গত বছর বাংলাদেশে গ্রাহকদের সেবা
প্রদানের এবং সমাজের ক্ষমতায়নের ২৫ বছর উদযাপন করেছে গ্রামীণফোন। এ মাইলফলক নিয়ে
আমরা ২০২৩ সালে প্রবেশ করেছি। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি এবং ছয় মাস শেষে, নিয়ন্ত্রক
সংস্থা গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কের সক্ষমতা ও গ্রাহক সন্তুষ্টি বারবার মূল্যায়নের পরে
গ্রামীণফোনের সিম বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। আমাদের সিম বিক্রি পুনরায়
চালু হওয়ার পরে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা আবার প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসে এবং আমরা ৮
কোটি গ্রাহকের মাইলফলক অর্জন করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের অব্যাহত নেটওয়ার্কে বিনিয়োগের কারণে তরঙ্গ ও সাইট চালু
করার ক্ষেত্রে আমাদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে। আমরা আমাদের ফাইবার কানেক্টিভিটি
দ্বিগুণ করেছি এবং সবমিলে ২০ হাজারের বেশি সাইট চালু করেছি। এর মাধ্যমে ভবিষ্যত উপযোগী
ডেটা নেটওয়ার্কের ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে আমাদের গ্রাহকদের জন্য উন্নতর
অভিজ্ঞতা প্রদান এবং দেশের এক নম্বর নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে। প্রোডাক্ট
পোর্টফোলিও উন্নত করতে আমরা উল্লেখযোগ্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি – একে আরও
স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক ও গ্রাহকদের জন্য আরও উপযোগী করে তোলা হয়েছে। আমাদের সেবাগুলো
যেনো আরও গ্রাহক-কেন্দ্রিক ও কার্যকরী হয় তা নিশ্চিতে এবং আমাদের গ্রাহকদের
ক্রমবর্ধ্মান চাহিদা মেটাতে এটা জরুরি ছিল। আমাদের চলমান আধুনিকায়ন ও রূপান্তর যাত্রায়
ইতিবাচক ফল আসা শুরু হয়েছে, যা আমাদের সক্ষমতা, দক্ষতা, টুলস ও অংশীদারিত্বের
সমন্বয়ে ভবিষ্যতের উপযোগী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখছে। আমাদের ভবিষ্যৎ
প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে আমরা নিরলস কাজ করে যাবো।”
গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ইয়েন্স বেকার বলেন, “২০২৩ সালের
প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোন ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী আর্থিক ফলাফল প্রদান করছে।
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার
মতো নানা প্রতিকূলতার মধ্যে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ও ইবিআইটিডিএ’র ক্ষেত্রে
টানা আট প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে গ্রামীণফোন। দৈনিক সাবক্রিপশন ও ট্র্যাফিক
রাজস্বে ২.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কারণে এ প্রান্তিকে মোট রাজস্ব ২.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে
দাঁড়িয়েছে ৩৭৩৪.৮ কোটি টাকায়। ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে বছরপ্রতি ডেটা রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে
১৪.২ শতাংশ, যা সাবস্ক্রিপশন ও ট্র্যাফিক রাজস্ব প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে
কাজ করেছে।”
“৬১ শতাংশ মার্জিন নিয়ে ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের ইবিআইটিডিএ বৃদ্ধি
পেয়েছে ২.৭ শতাংশ। ২০.৯ শতাংশ মার্জিন নিয়ে এ প্রান্তিকে নিট মুনাফা হয়েছে ৭৭৯.৭ কোটি
টাকা। গত বছর তরঙ্গ অধিগ্রহণের উচ্চ অবচয়, নতুন সাইট চালু করা এবং বেশি আর্থিক
ব্যয়ের কারণে বছরপ্রতি নিট মুনাফার ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে। এ প্রান্তিকে ফোরজি
নেটওয়ার্ক, কাভারেজ বিস্তৃতি ও তরঙ্গ স্থাপনে গুরুত্বারোপ করে গ্রামীণফোন মূলধন ব্যয়
(লাইসেন্স, লিজ ও এআরও ব্যতীত) হিসেবে ৬৯১.২৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
0 coment rios: