রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর উদ্বোধন, র‍্যালি, সেমিনার ও আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আজ ১৮ মে ২০২৪, শনিবার
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। প্রথম পর্বে, জাদুঘর প্রাঙ্গণে বেলুন উড়ানোর মাধ্যমে
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশহিসেবে আজ জাদুঘরে
ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়। উল্লেখ্য ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর প্রদর্শনী কার্যক্রম দীর্ঘদিন
বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বর্তমান মহাপরিচালকের কর্মতৎপরতায় ভ্রাম্যমাণ
জাদুঘর বাসটি পুনরায় চালু হয়েছে। বাসটি জাদুঘরের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য নিদর্শন দিয়ে সাজানো
হয়েছে। যা দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের জন্য জেলা/উপজেলায়
প্রেরণ করা হবে। দ্বিতীয় পর্বে, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও আইকম বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির যৌথ
উদ্যোগে ‘শিক্ষা ও গবেষণায় জাদুঘর’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জনাব মোঃ আবুল
মনসুর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব
মোঃ ইমরুল চৌধুরী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের উপ-কীপার ও আইকম
বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির সেক্রেটারি জনাব মো. সেরাজুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মালিহা নার্গিস আহমেদ।
সভাপতিত্ব করেন মহাপরিচালক জনাব মোঃ কামরুজ্জামান। জনাব মো. সেরাজুল ইসলাম তাঁর প্রবন্ধে
উল্লেখ করেন বলেন, ‘শিক্ষা ও গবেষণায় জাদুঘর’ শব্দগুচ্ছের অর্থ দাঁড়ায় জাদুঘর-সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান
জ্ঞানকে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান শেখানো ও
শিক্ষণ-এর মাধ্যমে কীভাবে জ্ঞানকে প্রসারিত ও আত্মীকৃত হচ্ছে তা উপলব্ধির চেষ্টা করা। শিক্ষা ও
গবেষণা একবিন্দুতে মিলিত না-হলে বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন টেকসই হবে না। তাই, শিক্ষা ও গবেষণায়
গুরুত্বারোপ এ বছর জাদুঘর দিবসের আহ্বান। জাদুঘরের শিক্ষা জীবনব্যাপী শিক্ষার সমরূপ। জাদুঘরের
সাফল্য পরিমাপের ক্ষেত্রে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম ও তার পরিবীক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু’টি
সূচক। এছাড়াও তিনি বলেন, গবেষণার মাধ্যমে সৃজিত জ্ঞান শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের
বোধগম্য ভাষায় পৌঁছানোই জাদুঘরের মূল লক্ষ্য। আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক মালিহা নার্গিস
আহমেদ বলেন, শিক্ষার গুরুত্ব সবসময়ই ছিলো। জাদুঘরের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শিক্ষা ও
গবেষণার জন্যই জাদুঘের নিদর্শন সংগ্রহ করা হতো। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে আর্ট হিস্টোরি এন্ড
মিউজিওলজী সার্টিফিকেট কোর্সটি চালু করা জাদুঘরের সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত। এছাড়াও তিনি
কালচারাল এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম চালু করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের আনুরোধ করেন। বিশেষ অতিথির
বক্তব্যে জনাব মোঃ ইমরুল চৌধুরী বলেন, জাদুঘর হলো একটি দেশের ঐতিহ্যের সংগ্রহশালা বা ভাণ্ডার।
মূলত জাদুঘর থেকে ইতিহাস, ধর্ম, ঐতিহ্যের ধারনা পাওয়া যায়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব মোঃ
আবুল মনসুর বলেন, শিক্ষা ও গবেষণায় জাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার কোন বয়স নেই।
জাদুঘর পরিদর্শনের মাধ্যমে যেকোন বয়সের মানুষ শিক্ষা অর্জন করতে পারে। আমাদের প্রত্যেকের
উচিৎ বেশি-বেশি জাদুঘর পরিদর্শন করা এবং অন্যকে উৎসাহিত করা। বিশেষ করে আমাদের নতুন
প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা ও গবেষণার যায়গা জাদুঘর। সভাপতির বক্তব্যে জনাব মোঃ
কামরুজ্জামান বলেন, জাদুঘরকে বলা হয় জনগণের বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ দর্শনার্থীগণ সরাসরি জাদুঘর
পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষা বা জ্ঞান লাভ করেন। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মহান
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর

দেশের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে নিরন্তর। সেমিনার ও আলোচনা সভা শেষে
মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী
সুজিত মোস্তফা ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর শিল্পীগোষ্ঠী।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: