শনিবার, ৮ জুন, ২০২৪

১৩টি তামাক বিরোধী সংগঠনের বাজেট প্রতিক্রিয়া : সিগারেটের কর হার বৃদ্ধির উদ্যোগ ইতিবাচক

এবারের বাজেট প্রস্তাবে সিগারেটের সকল স্তরে কর হার বৃদ্ধির প্রস্তাবকে ইতিবাচক বলে জানিয়েছে দেশে কর্মরত ১৩টি তামাক বিরোধী সংগঠন। বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে আজ শনিবার (৮ জুন ২০২৪) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় একথা জানিয়েছে তারা। বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দীর্ঘদিন পর মধ্যম, উচ্চ ও অতিউচ্চ স্তরের সিগারেটের করহার ১% বৃদ্ধি এবং নিম্ন স্তরের করহার গত বছরের চেয়ে ২বৃদ্ধি রাজস্ব বৃদ্ধি এবং কোম্পানির মুনাফা হ্রাসের ক্ষেত্রে ইতিবাচক। কিন্তু তামাকজাত দ্রব্যের যথেষ্ট মূল্য বৃদ্ধি না হওয়ায় তা তামাক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যকে কঠিন করে তুলবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে  বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব অনুসারে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানান তারা।

 

তাদের বাজেট প্রতিক্রিয়ায় আরো বলা হয়েছে, বাজেটে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম নিম্ন ন্তরে ৫ টাকা, মধ্যম স্তরে ৩ টাকা এবং উচ্চ ও অতিউচ্চ স্তরের যথাক্রমে ৭ টাকা ও ১০ টাকা করা হয়েছে। এই পরিমাণ মূল্য বৃদ্ধি তামাকের ব্যবহার কমাতে কার্যকর অবদান রাখবে না বরং তামাক কোম্পনির অযাচিত মুনাফা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে।

 

প্রতিক্রিয়ায় আরো বলা হয়েছে, প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার দাম ৩ টাকা এবং গুলের দাম ২ টাকা বৃদ্ধির এবং বিড়ির মূল্য অপরিবর্তিত রাখায় জর্দা, গুল ও বিড়ির ব্যবহার বাড়বে যা একইসাথে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর মারাত্বক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এতে তামাক ব্যবহারজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে যা রূপকল্প ২০৪১ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করবে।

 

বাজেট প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তামাক কর বিষয়ক নলেজ হাব বিএনটিটিপি এর আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, এবারের বাজেট প্রস্তাবে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও করহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনেকগুলো ইতিবাচক প্রস্তাব রয়েছে। অনেক বছর পর সিগারেটের চারটি স্তরেই মূল্য ও করহার বৃদ্ধি পেয়েছে, বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাকে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ হয়েছে। সিগারেটের খুচরা শলাকা ভাঙতি পয়সা মুক্ত হয়েছে, নিম্ন স্তরে মূল্য বৃদ্ধির হার বেশি এবং বিড়ির কাগজের ওপর কর হার বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু মূল্য বৃদ্ধির পরিমাণ কম হওয়ায় রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। তিনি বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব অনুসারে বাজেট প্রস্তাব সংশোধনের পরামর্শ দেন।

 

তিনি আরো বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপে প্রচলিত অ্যাডভেলোরেম পদ্ধতি বহাল রাখা হয়েছে। অ্যাডভেলোরেম পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করা হলে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি তামাকের ব্যবহার কমাতে কার্যকর অবদান রাখতো। পাশাপশি তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমতো।

 

এইড ফাউন্ডেশন, আর্ক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা), বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), ডেভলপমেন্ট একটিভিটি অব সোসাইটি (ডাস), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, মাদকাসক্তি ও নেসা নিরোধ সংস্থা (মানস), জাতীয় যক্ষা নিরোধ সংস্থা (নাটাব), প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল ও ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট সম্মিলিতভাবে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: